মুন্সীগঞ্জে পদ্মাতীরে ইলিশ বিক্রির রমরমা হাট

মুন্সীগঞ্জে পদ্মাতীরে ইলিশ বিক্রির রমরমা হাট

মুন্সীগঞ্জের পদ্মা তীরের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে বসছে ইলিশ মাছ বিক্রির হাট। তাছাড়া মুন্সীগঞ্জের পদ্মার চরগুলোতেও মিলছে ইলিশ। যদিও দাম বেশি তারপরেও দূর-দূরান্ত হতে পাইকাররা ওই সমস্ত হাটে এসে মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। 

মুন্সীগঞ্জের পদ্মা তীরের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে বসছে ইলিশ মাছ বিক্রির হাট। তাছাড়া মুন্সীগঞ্জের পদ্মার চরগুলোতেও মিলছে ইলিশ। যদিও দাম বেশি তারপরেও দূর-দূরান্ত হতে পাইকাররা ওই সমস্ত হাটে এসে মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। 

পদ্মার দুর্গম চড়ে নিষিদ্ধ মা ইলিশের হাট হতে শত শত নারী-পুরুষ মাছ কিনে বাড়ি ফিরছে নির্বিঘ্নে। ওই সমস্ত হাটগুলোতে প্রতিদিন চলে লাখ লাখ টাকার মা ইলিশ বেচাকেনা।  

সরেজমিনে দেখা গেছে, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা বাংলাবাজার নদীর তীরে প্রতিদিন নৌকায় বসে ইলিশ বিক্রির হাট। জেলেরা পদ্মা-মেঘনা হতে মাছ ধরে নিয়ে এসে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় মাছ রেখে বিক্রি করেন। প্রশাসনের লোকজনের আনাগোনার খবর পেলেই দ্রুত ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে চলে যান গভীর নদীতে। শ্রীনগরের বাঘড়ার দুর্গম চড়ে নিষিদ্ধ মা ইলিশের হাট বসছে প্রতিদিন। 

এদিকে লৌহজংয়ে পদ্মাতীরেও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে মা ইলিশ। পদ্মা সেতুর উজান মাওয়ার যশলদিয়া পয়েন্টে, লৌহজং-টঙ্গীবাড়ি পয়েন্টে এবং পাশের সিডারচর পয়েন্টের বিভিন্ন এলাকার নদীতে শতাধিক নৌকায় দিনরাত অবাধে মা ইলিশ নিধন চলছে। এসব ইলিশ লৌহজং উপজেলার পদ্মানদীর তীরবর্তী এলাকার কুমারভোগ প্রজেক্ট, সিংহেরহাটি, বেজগাঁও, শামুরবাড়ি ওস্তাকারপাড়ায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রকাশ্যে বসে মা ইলিশ বিক্রির হাট। 

পদ্মায় মা ইলিশ নিধনের মহোৎসব চললেও দেখার যেন নেই কেউ। জেলেরা অবাধে ইলিশ ধরছে। গাঁওদিয়া ইউনিয়নের শামুরবাড়ি গ্রামের ওস্তাকারপাড়ায় সকাল ৬টা থেকে ৯টা, দুপুর ১২টা থেকে ২টা ও বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে মা ইলিশ বেচাকেনা। এক কেজি ওজনের প্রতিটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৫শ থেকে ১৬শ টাকায়। দেড় কেজি ওজনের ইলিশের হালি বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা। স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে আবার তাদের ম্যানেজ করে নদীতে চলছে ইলিশ ধরার মচ্ছব।

অনুসন্ধানে জানা যায়, লোকমান ওস্তাকার এবং রাজিব খানের নেতৃত্বে শামুরবাড়ি গ্রামে এসব ইলিশ প্রকাশ্যে বিক্রি করছে স্বপন ওস্তাকার, তপন ওস্তাকার, কাদির ওস্তাকার, সফি ওস্তাকার, দীপু ওস্তাকার, দীলু ওস্তাকার, রফিক ও মালেক। এই সমস্ত মা ইলিশ বিক্রিতে আইনশৃঙলা বাহিনীর হাত থেকে বাচঁতে মাছ বিক্রেতারা বিভিন্ন পয়েন্টে নিজেদের লোক বসিয়ে রাখছেন। তারাও আইনশৃঙলা বাহিনীর অভিযানের তথ্য সরবরাহ করছে। 

মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ রাখতে ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। তবে এ নিষেধাজ্ঞা মানছে না কিছু অসাধু জেলেরা। নিষিদ্ধ এই সময়টাকে এখানকার জেলেরা ইলিশ উৎসব মনে করে।

মাওয়ার জেলে দুলাল বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর এ সময়ে ইলিশ মাছ বেশি ধরা পড়ছে। আমরা গভীর রাতে মাছ ধরার জন্য নদীতে যাই আবার ভোর হলে যে সময়ে প্রশাসন নদীতে কম থাকে সে সময়ে ফিরে আসি। তারপরেও প্রায়ই কোস্টগার্ড নৌ-পুলিশের হামলার শিকার হই। তবে আমাদের ইলিশ ধরার নৌকাগুলোর খুব স্পিড থাকায় এগুলো চালিয়ে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সহজেই আমরা পালিয়ে যেতে পরি।

এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ.টি.এম তৌফিক মাহমুদ বলেন, আমরা মা ইলিশ রক্ষায় নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। ইলিশ মাছ ধরা ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ধরে জেল জরিমানা করা হচ্ছে। তারপরেও পুরোপুরি মা ইলিশ মাছ নিধন বন্ধ করা যাচ্ছে না। আমরা ১০ বছর যাবৎ মা ইলিশ রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

ব.ম শামীম/আরকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *