বাফুফে নির্বাচনে আজ ছিল মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের প্রথম দিন। প্রথম দিনে মোট ২৫ টি মনোনয়ন পত্র বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক সদস্য পদে ২০ টি, সহ-সভাপতি পদে চারটি ও সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে একটি। সভাপতি পদে কোনো মনোনয়ন বিক্রি হয়নি।
বাফুফে নির্বাচনে আজ ছিল মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের প্রথম দিন। প্রথম দিনে মোট ২৫ টি মনোনয়ন পত্র বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক সদস্য পদে ২০ টি, সহ-সভাপতি পদে চারটি ও সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে একটি। সভাপতি পদে কোনো মনোনয়ন বিক্রি হয়নি।
মনোনয়ন পত্র ক্রয়-বিক্রয়ের প্রথম দিনে চমক সহ-সভাপতি পদে নাসের শাহরিয়ার জাহেদী। তিনি দেশের বিশিষ্ট ফার্মাসিটিক্যালস প্রতিষ্ঠান রেডিয়্যান্টের চেয়ারম্যান এবং জাহেদী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক। সদ্য বিলুপ্ত জাতীয় সংসদে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঝিনাইদাহের সংসদ সদস্যও ছিলেন।
রাজনীতি ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব হলেও তিনি ফুটবল অনুরাগীও। দেশের প্রথম বেসরকারি ফুটবল একাডেমি শামসুল হুদা একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি। শামসুল হুদা একাডেমী বাফুফের সর্বোচ্চ রেটিং প্রাপ্ত একাডেমি হিসেবেও স্বীকৃতি পেয়েছেন। এই একাডেমি থেকে কয়েকজন ফুটবলার প্রিমিয়ার লিগেও খেলছেন।
বাফুফের সহ-সভাপতি পদে মূলত আর্থিক সামর্থ্যবান, সামাজিক ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ফুটবলানুরাগীরা থাকেন। এবার আসন্ন নির্বাচনে এ রকম ব্যক্তিত্বের সন্ধান সেভাবে মিলছিল না। গত কয়েক দিন যাদের নাম শোনা গিয়েছিল তারা সেই মাত্রার ছিলেন না। প্রথম দিনেই জাহেদীর মনোনয়ন পত্র ক্রয় খানিকটা চমকই।
আকস্মিকভাবে বাফুফে নির্বাচনে অংশগ্রহণ সম্পর্কে নাসের শাহরিয়ার জাহেদী বলেন,‘বাংলাদেশে ফুটবলের জনপ্রিয়তা অনেক। ফুটবল মেধাও রয়েছে একাডেমি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে বুঝতে পেরেছি। ফুটবল ফেডারেশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হলে ফুটবল উন্নয়নে আরো কাজ করার সুযোগ থাকবে এবং সামনে সুন্দর নেতৃত্বও আসছে। এ রকম ভাবনা থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ।’
সামাজিক অঙ্গনে বেশ পরিচিত মুখ হলেও ফুটবলাঙ্গনে তিনি খানিকটা অচেনাই। তাই নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের ভাগ্য তুলে দিলেন কাউন্সিলরদের ওপর, ‘ফুটবলের ভালোবাসা ও কাজের আগ্রহ নিয়ে নির্বাচনে এসেছি। জয়-পরাজয়ের বিষয়টি সম্পূর্ণ কাউন্সিলরদের উপর। তারা যদি যোগ্য ও প্রয়োজন মনে করেন তাহলে ভোট দেবেন।’ আজ তিনি মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেছেন লোক মারফত। মনোনয়ন পত্র জমার সময় অবশ্য সশরীরেই আসার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।
বাফুফেতে সহ-সভাপতি পদ চারটি। প্রথম দিনে এই পদে চারটি মনোনয়ন বিক্রি হয়েছে। ব্রাদার্স ইউনিয়নের সদস্য সচিব সাব্বির আহমেদ আরিফ, কে স্পোর্টসের স্বত্ত্বাধিকারী ফাহাদ করিম ও সাবেক জাতীয় ফুটবলার ইকবাল হোসেন সহ-সভাপতি পদে মনোনয়ন নিয়েছেন। সাব্বির আরিফ ক্রীড়া সংগঠক ও রাজনীতিবিদ। কে স্পোর্টসের ফাহাদ মূলত ক্রীড়া ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্ট ব্যবসায়ী। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের মেয়াদেই বেশ কয়েকটি ইভেন্ট করেছেন। এবারই প্রথম ক্রীড়া সংগঠকের ভূমিকায় আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
সাবেক জাতীয় ফুটবলার ইকবাল সদস্য ফরমও গ্রহণ করেছেন। ইকবাল ছাড়া সদস্য পদে মনোনয়ন নিয়েছেন জাকির হোসেন চৌধুরী, মাহফুজা আক্তার কিরণ, টিপু সুলতান, গোলাম গাউস, হিল্টন, ফিফা থেকে নিষিদ্ধ বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের স্ত্রী, আমিরুল ইসলাম বাবু, নজু, মামুন, শাহীন, মঞ্জুরুল আলম দুলালসহ আরও আট জন।
আজ মনোনয়নপত্র ক্রয়-বিক্রয়ের দিনও ভোটার তালিকা নিয়ে প্রতিবাদ ছিল। জেলা-বিভাগীয় পর্যায়ের কয়েকজন ক্রীড়া সংগঠক আজও বাফুফে ভবনে এসে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত আপত্তি জানান। ময়মনসিংহ বিভাগীয় ফুটবল এসোসিশেয়নের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ান বলেন,’ চারটি জেলার ভোটাধিকার বাদ হয়েছে। কেন বাতিল হয়ে এটার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা ঐ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি।’
বাংলাদেশের ফুটবল ছাড়া বাকি সকল ফেডারেশনের নির্বাচন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে হয়ে থাকে। সেই নির্বাচনী তফসিলে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর আপত্তি থাকে। বাফুফে অবশ্য সেই রীতি অনুসরণ করে না। নির্বাচন কমিশন সরাসরি মনোনয়ন বিক্রি থেকে কার্যক্রম শুরু করে। কাউন্সিলর নিয়ে আপত্তি থাকলে নির্বাহী কমিটি আলাদা একটি কমিশন গঠন করে সমাধান করে। এবার সেই কমিটি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন কয়েকজন জেলা ও বিভাগীয় সংগঠক.’শুনেছি কাউন্সিলর অভিযোগ নিরসন কমিটি গঠনের বিষয়টি নির্বাহী সভায় নাকি অনুমোদিত নয় এবং এই কমিটি যে গঠন হয়েছে সেটার আনুষ্ঠানিক একটা চিঠি বা পত্র চেয়েছি সেটাও আমাদের তারা দিচ্ছে না।’
আগামীকাল ও ১২ অক্টোবর সকাল ১০ টা-বিকাল ৫ টা পর্যন্ত মনোনয়ন পত্র ক্রয়-বিক্রয় চলবে। সভাপতি পদে এক লাখ, সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে ৭৫ হাজার ও সহ-সভাপতি ৫০ হাজার এবং সদস্য পদে মনোনয়ন পত্রের দাম ২৫ হাজার টাকা।
প্রথম দিন মনোনয়ন পত্র সংগ্রহের তালিকা
এজেড/এফআই