ব্যক্তির হিসাব জব্দ থাকলেও সচল থাকবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লেনদেন

ব্যক্তির হিসাব জব্দ থাকলেও সচল থাকবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লেনদেন

অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত অনেক ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লেনদেন বন্ধ রেখেছ ব্যাংকগুলো। এতে করে প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রমে সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারছে না। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমিকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এমন পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নিজস্ব হিসাব জব্দ থাকলেও তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ব্যাংক লেনদেন স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের সঙ্গে জড়িত অনেক ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এর ফলে অনেক ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লেনদেন বন্ধ রেখেছ ব্যাংকগুলো। এতে করে প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রমে সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারছে না। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন শ্রমিকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এমন পরিস্থিতিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নিজস্ব হিসাব জব্দ থাকলেও তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ব্যাংক লেনদেন স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এখন পর্যন্ত আমরা কোনো প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট জব্দ করিনি। সেটা এস আলমের হোক বা সালমান এফ রহমানের। কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়নি। যাদের অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে সবগুলো ব্যক্তি অ্যাকাউন্ট। আমরা কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হাত দিতে চাই না। কর্মসংস্থান নষ্ট এবং উৎপাদন ব্যাহত হোক আমরা সেটা চাই না।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে কাজ করছে। সম্প্রতি বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্ট, সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্ট এবং বিএফআইইউতে দাখিল করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএফআইইউয়ের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ২৩ (১) (গ) ধারা মোতাবেক বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মানিলন্ডারিং অপরাধ সন্দেহে কতিপয় ব্যক্তি ও একক ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত হিসাবের লেনদেন স্থগিত রাখতে বলা হয়।

লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ উক্ত নির্দেশনার বাইরে ব্যক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির হিসাবে লেনদেন স্থগিত করেছে। ফলে ওসব প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রদান ও অনেক ক্ষেত্রে আমদানি-রপ্তানি সংশ্লিষ্ট লেনদেন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এ ধরনের কার্যক্রম অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং এর ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে পারে, যা মোটেই কাম্য নয়।

বিষয়টি স্পষ্ট করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বিএফআইইউ সাম্প্রতিক বিভিন্ন নির্দেশনার মাধ্যমে ব্যক্তি ও একক ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত হিসাব ব্যতীত ব্যক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানির হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়নি।

ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। সরকারের পতনের পর তার আমলের মন্ত্রী-এমপি, বিভিন্ন সহযোগীসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার শীর্ষ পদে থাকা ব্যক্তিদের দুর্নীতি, অর্থপাচার ও ঋণ কেলেঙ্কারির খবর বেড়িয়ে আসছে। হাসিনা পালানোর সঙ্গে সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তিরাও গা ঢাকা দেন। ফিরে অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আটক ও গ্রেপ্তার হন। এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ব্যাংক হিসাব তলব ও জব্দ করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। একই সঙ্গে তাদের  স্ত্রী, সন্তানসহ ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠা‌নিক ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করতে বলা হয়।

ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ হওয়ার তালিকায় সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপি, ব্যবসায়ী, গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার শীর্ষ ব্যক্তি, সাবেক সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাসহ শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে।

এসআই/এমএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *