বৈদেশিক সহায়তার ৪৮ বিলিয়ন ডলার ব্যবহারের উদ্যোগ

বৈদেশিক সহায়তার ৪৮ বিলিয়ন ডলার ব্যবহারের উদ্যোগ

চলমান ডলার সংকট কাটাতে পাইপলাইনে থাকা ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

চলমান ডলার সংকট কাটাতে পাইপলাইনে থাকা ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা জানান তিনি। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার এক মাস পূর্ণ হয়েছে গত ৮ আগস্ট। এ সময়ে সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের বিষয়ে জাতিকে জানাতে এই ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা।  

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, পাইপলাইনে থাকা ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মেগাপ্রকল্পের নামে লুটপাট বন্ধের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে রাশিয়া এবং চীন থেকে প্রাপ্ত ঋণের সুদের হার কমানো ও ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। সব উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে সম্পর্ক আরও নিবিড় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব অর্থনৈতিক সূচক ও পরিসংখ্যানের প্রকৃত মান বা সংখ্যা প্রকাশের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জিডিপি, মূল্যস্ফীতি ইত্যাদির সঠিক উপাত্ত সংগ্রহ, প্রাক্কলন এবং প্রকাশের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার অনৈতিক অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সাপোর্ট চাওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বিশ্ব ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, জাইকা থেকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রিমের অর্থ পরিশোধ ও বকেয়া পাওনা নিয়ে রাশিয়ান ফেডারেশনের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আলোচনা চলছে।

মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় চলতি অর্থবছরে ২২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এর মধ্যে চাল ও গম আমদানির জন্য ৫ হাজার ৮০০ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ সংগ্রহে ৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা এবং খাদ্য ভর্তুকির তিনটি প্রোগ্রামের জন্য ৭ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।   মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার লুটপাট করার জন্য নতুন করে ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে বাজার ছেড়েছে। যার কারণে মুদ্রাস্ফীতির শিকার হয়েছে দেশের মানুষ। এই অতুলনীয় মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে পলিসি সুদের হার বৃদ্ধি করে ৯ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এর আগে দায়িত্ব নেওয়ার ১৭ দিন পর গত ২৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা। সেই ভাষণে দেশের সংকটকালে ছাত্রদের আহ্বানে দায়িত্ব গ্রহণ করার কথা জানান ইউনূস। ভাষণে কখন নির্বাচন হবে, কী সংস্কার হবে, রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হবে কি না এবং দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভয়াবহ বন্যাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন।

এসআই/এসএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *