খুলনার উপকূলীয় উপজেলা পাইকগাছায় বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রায় ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
খুলনার উপকূলীয় উপজেলা পাইকগাছায় বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রায় ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের কালীনগর গ্রামের রেখামারী খালের গোড়ার দিকের ওই বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়।
জানা গেছে, পাইকগাছার কালীনগর গ্রামের পাশেই আছে ভদ্রা নদী। এদিন দুপুরের দিকে সেখানে পাউবোর ২২ নম্বর পোল্ডারের উপকূল রক্ষার বেড়িবাঁধের প্রায় ৯০ ফুটের মতো অংশ ভেঙে যায়। এ সময় ওই পোল্ডারের ভেতরে থাকা ১৩টি গ্রামের মধ্যে পানি প্রবেশ শুরু করে।
প্লাবিত গ্রামগুলো হলো- কালীনগর, দারুল মল্লিক, গোপী পাগলা, তেলিখালী, সৈয়দখালী, খেজুরতলা, সেনের বেড়, হাটবাড়ি, ফুলবাড়ী, বাগীরদানা, দুর্গাপুর, হরিণখোলা ও নোয়াই।
দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য পলাশ রায় বলেন, বেড়িবাঁধের একটি অংশে ফাটল ছিল বলে শুনেছিলাম। আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে লোকজন নিয়ে সেটি দেখতে গেলে আমার চোখের সামনেই বাঁধ ভেঙে যায়। এরপর এলাকার জনপ্রতিনিধিদের জানালাম। এই পোল্ডারের আওতায় থাকা পাঁচটি ওয়ার্ডের মন্দির-মসজিদে যত মাইক আছে সেগুলো দিয়ে খবরটা প্রচারের ব্যবস্থা করি। এরপর আমরা স্থানীয় লোকজন নিয়ে বাঁধগুলো সংস্কারের চেষ্টা করি। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানালে তাদের প্রতিনিধিরাও আসেন। ২০০ বাঁশ আনা হয়েছে। দুটি মাটি কাটার যন্ত্র (ভেকু) দিয়ে কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়ায় এখানকার গ্রামের সব চিংড়ি ঘের ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে, বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবাই খুব আতঙ্কে আছেন। এর আগে চলতি বছরের ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসেও ২২ নম্বর পোল্ডারের গোপী পাগলা গ্রামের বাঁধ ভেঙে এই ১৩ গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল।
দেলুটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিপন কুমার মণ্ডল জানান, বেড়িবাঁধ ভেঙে কালীনগর, দারুল মল্লিক, হরিণখোলা, সৈয়দখালি ও সেনেরবেড় গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে গ্রামগুলোর প্রায় ৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম জানান, দুপুরে জোয়ারের সময় কালীনগর গ্রামে প্রায় ৩০ মিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এরপর জোয়ারের পানি আশপাশের গ্রামগুলোতে প্রবেশ করে। পূর্ণিমার কারণে উপকূলীয় এলাকার নদীতে জোয়ারের পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট বেড়েছে। সে কারণে দাকোপ, কয়রা, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটার কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। সেগুলোও দ্রুত মেরামত কাজ শুরু করা হচ্ছে। আগামী ২ থেকে ৩ দিন জোয়ারের পানির উচ্চতা বেশি থাকবে। বেড়িবাঁধ মেরামতে পুরোদমে কাজ চলছে।
মোহাম্মদ মিলন/এফআরএস