বিভিন্ন রূপে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন করতে চাইছে। কিন্তু হত্যা–গণহত্যার বিচারের আগে দলটি প্রত্যাবর্তন করতে চাইলে তাদের প্রতিহত করা হবে। গণহত্যার দোসররা আন্তর্জাতিক সহায়তা নিয়ে দেশে বিভক্তি তৈরি করতে চায়।
বিভিন্ন রূপে আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তন করতে চাইছে। কিন্তু হত্যা–গণহত্যার বিচারের আগে দলটি প্রত্যাবর্তন করতে চাইলে তাদের প্রতিহত করা হবে। গণহত্যার দোসররা আন্তর্জাতিক সহায়তা নিয়ে দেশে বিভক্তি তৈরি করতে চায়।
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় নাগরিক কমিটি আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে’ রাজধানীর মেরুল বাড্ডার ডিআইটি খেলার মাঠে এ সমাবেশ করা হয়। ‘ঢাকা রাইজিং’ শিরোনামে এটি ছিল তাদের দ্বিতীয় সমাবেশ। এর আগে ৬ অক্টোবর যাত্রাবাড়ীতে সমাবেশ করেছিল তারা।
গত জুলাই–আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় রামপুরা-বাড্ডা এলাকায় যারা গুলিতে নিহত হন, তাদের পরিবারের সদস্যরা শুক্রবারের সমাবেশে অংশ নেন। এ ছাড়া আন্দোলনের সময় আহত হওয়া কয়েকজন এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন।
বাড্ডা-রামপুরাকে আন্দোলনের ‘প্রথম স্বাধীন জায়গা’ বলে সমাবেশে উল্লেখ করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে মুজিববাদের বিরুদ্ধে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, দেশের যেখানেই আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসররা ফিরে আসার চেষ্টা করবে, সেখানেই তাদের প্রতিহত করতে হবে। পাশাপাশি অতি দ্রুত দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেটকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
সমাবেশে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের অনেকে বক্তব্য দেন। এ ছাড়া আন্দোলনে আহত হওয়া এবং রামপুরা–বাড্ডা এলাকায় নেতৃত্ব দেওয়া বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী সমাবেশে কথা বলেন। তাদের প্রায় সবাই হুঁশিয়ারি করেন, বিচারের আগে প্রত্যাবর্তন করতে চাইলে আওয়ামী লীগকে শক্ত হাতে দমন করা হবে।
পাশাপাশি আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর খোঁজ নেওয়া এবং আহত ব্যক্তিদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।সমাবেশে ‘মুজিববাদ মুর্দাবাদ, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’—এ রকম বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। নিহত কারও কারও মা–বাবা সন্তানের হত্যাকাণ্ডের জন্য বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের কর্তাব্যক্তিদের বিচার দাবি করেন।
যে রূপেই ফিরে আসুক না কেন, ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগকে শক্ত হাতে দমন করবে বলে হুঁশিয়ারি দেন মাওলানা নাজির হোসেন। তার সম্পর্কে সমাবেশে বলা হয়, আন্দোলনের সময় খিলগাঁও এলাকার সংগঠক ছিলেন তিনি। সমাবেশে তিনি বলেন, শহীদদের নামে সরকারি বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণ করতে হবে।
পাশাপাশি এই আন্দোলন ও শহীদদের বীরগাঁথা পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তিনি।
আন্দোলনের সময় আহত হয়েছিলেন রেদোয়ানুল হোসাইন। তিনি সমাবেশে বলেন, ভবিষ্যতে যাতে আর কোনো স্বৈরাচার না আসে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই ব্র্যাক বিশ্বিদ্যালয়ের সামনে গুলিতে নিহত হন শিক্ষার্থী মারুফ হোসাইন। তার বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস সমাবেশে বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার তার ছেলেকে বাঁচতে দেয়নি।
ছেলের হত্যাকারীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
এমএ