বাংলাদেশকে আড়াই বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি  

বাংলাদেশকে আড়াই বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি  

বাংলাদেশকে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার ( আড়াই বিলিয়ন ডলার ) ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্ব ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ১০০ কোটি বা এক বিলিয়ন ডলার এবং এডিবি ১৫০ কোটি বা দেড় বিলিয়ন ডলার দেবে। ব্যাংক খাত সংস্কারসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের আধুনিকায়ন এবং সক্ষমতা বাড়াতে এ ঋণ সহায়তা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।

বাংলাদেশকে ২৫০ কোটি মার্কিন ডলার ( আড়াই বিলিয়ন ডলার ) ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্ব ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক ১০০ কোটি বা এক বিলিয়ন ডলার এবং এডিবি ১৫০ কোটি বা দেড় বিলিয়ন ডলার দেবে। ব্যাংক খাত সংস্কারসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের আধুনিকায়ন এবং সক্ষমতা বাড়াতে এ ঋণ সহায়তা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) অর্থায়ন সহযোগী সংস্থা দুটির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের পৃথক বৈঠক হয়। বৈঠকে এই ঋণ সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা জানিয়েছেন।

তিনি জানান, বাংলাদেশের ব্যাংক ও আর্থিক খাত সংস্কারে তিন শর্তে ১০০ কোটি বা ১ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তবে এখন পলিসি সহায়তার জন্য ৭৫০ মিলিয়ন ডলার দেবে বলেছে বিশ্বব্যাংক। ডিসেম্বরে এ সহায়তা পাওয়া যাবে। আর ইনভেস্টমেন্ট লোন ও গ্যারান্টি ফ্যাসিলিটি হিসেবে আরও ২৫০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দেওয়া হবে। তবে তা পেতে আরও সময় লাগবে। এছাড়া এডিবি ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার দেবে। প্রথমে ৫০ মিলিয়ন ডলার দেবে। পরবর্তী দুই দাপে আরও ৫০ মিলিয়ন ডলার করে দেবে।

তিনি আরও বলেন, ঋণ পেতে কিছু শর্ত পালন করতে হবে বাংলাদেশকে। এর মধ্যে বেসরকারি খাতে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি গঠন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে খেলাপি ঋণের নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং নতুন গঠিত টাস্কফোর্সের অডিট ফার্মের কার্যবিবরণী। তবে শর্তের ৫০ শতাংশই ইতোমধ্যে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব ও অর্থ দপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থায়নবিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনুসর। বৈঠকে ম্যাক্রো ইকনোমি কীভাবে উন্নত করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে মূল্যস্ফীতি, পাচারের অর্থ ফেরানো ও প্রবৃদ্ধিসহ নানা বিষয় উঠে আসে। দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা রক্ষায় সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা জানান গভর্নর। এসময় আর্থিক খাত সংস্কারের যুক্তরাষ্ট্র সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলে গভর্নরকে আশ্বাস দেওয়া হয়।

ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ব্যাংক খাত সংস্কারে জোর দেয় নতুন অন্তর্বর্তী সরকার। এই সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুরকে। এরপর ১০টি ব্যাংক ও ১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়। এর মধ্যে ৯টির মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ ছিল বহুল আলোচিত প্রভাবশালী এস আলম গ্রুপের হাতে। এসব ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপ নামে-বেনামে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা বের করে নিয়েছে, যা আদায় করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে পর্ষদ পরিবর্তিত হওয়া ব্যাংকগুলো। তারল্য–সংকটে পড়ে এসব ব্যাংকের স্বাভাবিক লেনদেন কার্যক্রম ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এই ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের বেতনও অনিয়মিত হয়ে পড়েছে।

এ জন্য ব্যাংক খাত সংস্কারে কমিশন গঠনের পরিবর্তে দ্রুত তিনটি টাস্কফোর্স করার পরিকল্পনা করছে সরকার। কারণ, কমিশন গঠন করে সুপারিশ প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। এর পরিবর্তে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে শিগগিরই সংস্কার শুরু করতে চায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা। টাস্কফোর্সের মধ্যে একটি হবে, খেলাপি ঋণ ব্যবস্থাপনা–সংক্রান্ত, আরেকটি বাংলাদেশ ব্যাংক শক্তিশালীকরণ বিষয়ে। অন্য টাস্কফোর্স হবে পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফেরত আনা নিয়ে।

জানা গেছে, ব্যাংক খাত সংস্কারে টাস্কফোর্সগুলো যাতে যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারে, সে জন্য দেশি-বিদেশি সর্বোচ্চ কারিগরি জ্ঞান ও সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। এ জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তাও কম সুদের বিদেশি উৎস থেকে সংগ্রহের চেষ্টা চালাচ্ছে বাংলাদেশ। তাতে সাড়া দিয়েছে বিশ্বব্যাংক ও এডিবি।

এসআই/এসকেডি

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *