জন্মের পর থেকে এত পানি দেখিনি। ছোটখাটো বন্যা দেখেছি কয়েকবার। কিন্তু আমাদের এই এলাকায় পানি ওঠেনি কখনও। কল্পনাও করতে পারিনি গোমতীর এই এলাকার বাঁধ ভেঙে আমাদের সব তলিয়ে যাবে। সবকিছু যেন দুঃস্বপ্নের মতো লাগছে।
জন্মের পর থেকে এত পানি দেখিনি। ছোটখাটো বন্যা দেখেছি কয়েকবার। কিন্তু আমাদের এই এলাকায় পানি ওঠেনি কখনও। কল্পনাও করতে পারিনি গোমতীর এই এলাকার বাঁধ ভেঙে আমাদের সব তলিয়ে যাবে। সবকিছু যেন দুঃস্বপ্নের মতো লাগছে।
কুমিল্লার গোমতী নদীর ভেঙে পড়া বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় ঢাকা পোস্টকে এসব কথা বলেন বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা সুজন মিয়া। তিনি পেশায় একজন সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক।
সুজন মিয়া বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে মসজিদের মাইক থেকে মাইকিং শুনলাম সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলছে। কথাটি শুনে যেন আকাশ থেকে পড়লাম। বুড়বুড়িয়া এলাকার বাঁধ কখনোই ভাঙেনি। আমরা খুব নিশ্চিন্ত ছিলাম, বুড়বুড়িয়া এলাকার বাঁধ ভাঙবে না।
তিনি বলেন, মাইকিং শোনার পর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোনোরকমে দৌড়ে হাতের কাছে যা পেয়েছি তা নিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে আসি। ঘরের সব ভেতরে রয়ে গেছে। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি সব বাড়িতেই পড়ে রয়েছিল।
‘ভোরে ভিন্ন এক বুড়বুড়িয়া গ্রাম চোখে দেখলাম। আমাদের চিরচেনা সেই গ্রামটি এখন পানির নিচে তলিয়ে গেছে। আমাদের সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে। নিষ্ঠুর পানি আমাদের সব কেড়ে নিলো। একটা প্লেট-বাটিও আনতে পারিনি।’
তিনি আরও বলেন, আমি অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় করি তা দিয়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোনোরকমে খেয়েপরে বাঁচি। আমাদের ওপর এই যে ক্ষতি নেমে এলো তা কী দিয়ে পোষাব জানি না। আমাদের ভিটেমাটিও এখন আর নেই।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কুমিল্লায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের ডাম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তাতে গোমতীর বেড়ীবাঁধের অন্তত ২০টি পয়েন্টে ভাঙনের সম্ভাবনা তৈরি হয়। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার দিকে নদীর বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া এলাকার বাঁধ ভেঙে পড়ে। মুহূর্তেই গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দি হন লক্ষাধিক মানুষ।
এমএ