‘প্রতিরোধযোগ্য’ হলেও মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ স্ট্রোক

‘প্রতিরোধযোগ্য’ হলেও মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ স্ট্রোক

বিশ্বজুড়ে পঙ্গুত্বের প্রধান কারণ এবং মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ হিসেবে স্ট্রোককে দায়ী করা হয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে অনেকাংশেই এই স্ট্রোককে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাদের মতে, দেশেই প্রতি ছয়জনের একজন ব্যক্তি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। বর্তমানে দেশে স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ৫ লাখ লোক স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবে ভুগছে।

আজ (মঙ্গলবার) বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনস আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব তথ্য জানান। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য–‘একত্রে আমরা স্ট্রোকের চেয়ে বড়’।

বক্তারা বলেন, সাধারণত পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে স্ট্রোকে আক্রান্তের হার বেশি লক্ষ্য করা গেলেও যে কোনো বয়সেই তা হতে পারে। ৫০ বছর বয়সের পর প্রতি ১০ বছরে স্ট্রোকের ঝুঁকি দ্বিগুণ হয়। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যাই বেশি। এ দিকে দেশে বিশাল সংখ্যক স্ট্রোকের রোগী থাকলেও নিউরোসার্জন রয়েছেন মাত্র ২১২ জন। যদিও রোগী অনুপাতে অন্তত ১ হাজার ৬০০ জন নিউরোসার্জন প্রয়োজন।

রোগীদের মধ্যে সচেতনতার ঘাটতি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ধূমপান ও তামাকজাত পণ্য সেবনের প্রবণতা, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনসহ নানা কারণে স্ট্রোকে মৃত্যু বাড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

তারা বলেন, স্ট্রোক প্রধানত দুই প্রকারের হয়ে থাকে। মস্তিষ্কে হঠাৎ রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে বা বন্ধ হয়ে গেলে মস্তিষ্কের এই অংশের কার্যক্ষমতা কিছু সময়ের জন্য অথবা সময় মতো সঠিক চিকিৎসা না পেলে স্থায়ীভাবে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সাধারণত রোগী পক্ষাঘাতগ্রস্ত প্যারালাইসিস সমস্যা, কথা বলতে অক্ষম হওয়া, মুখ বাঁকা হয়ে যাওয়া বা খিঁচুনিতে আক্রান্ত হওয়া, এমনকি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে একে ইস্কেমিক স্ট্রোক বলা হয়। আবার অন্য আরেকরকম স্ট্রোক হয়, যেখানে মস্তিষ্কের রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে; যা সাধারণভাবে যা ব্রেন হেমারেজ নামে পরিচিত। এই রকম স্ট্রোকের উপসর্গ সাধারণত আরও ভয়াবহ হয়। এ ছাড়াও মস্তিষ্কের রক্তনালির অন্যান্য রোগ থাকার ফলে রক্তপাত হয়ে স্ট্রোক হয়। রক্তনালির বিশেষ অংশ ফুলে গিয়ে ফেটে যাওয়া ধমনি ও শিরার অস্বাভাবিকতা থেকেও স্ট্রোক হতে পারে।

অনুষ্ঠানে দ্রুত স্ট্রোকের উপসর্গ বোঝার জন্য মুখ বেঁকে যাওয়া, হঠাৎ হাতের দুর্বলতা, কথা বলতে কষ্ট হওয়া এই তিন উপসর্গের প্রতি জোর দেওয়ার তাগিদ দেন বিশেষজ্ঞরা। 

দুইদিন ব্যাপী এই আয়োজনের প্রথম দিনের র‍্যালি এবং আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রশাসন অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভিসি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জনসের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মো. মওদুদুল হক, সদস্য সচিব ডা. মো. নুরুজ্জামান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. মো. জাহিদ রায়হান এবং অন্যান্য নিউরোসার্জনবৃন্দ।

টিআই/এনএফ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *