পাকিস্তানের শেষ ভরসা হয়ে থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ানের উইকেটটা নিয়েই ভোঁ দৌড় দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তখন পাকিস্তানের গুটিয়ে যাওয়া কেবল সময়ের অপেক্ষা। টেলএন্ডার মোহাম্মদ আলিকে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের কফিনে শেষ পেরেকটাও ঠুকে দিলেন মিরাজ।
পাকিস্তানের শেষ ভরসা হয়ে থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ানের উইকেটটা নিয়েই ভোঁ দৌড় দিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তখন পাকিস্তানের গুটিয়ে যাওয়া কেবল সময়ের অপেক্ষা। টেলএন্ডার মোহাম্মদ আলিকে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের কফিনে শেষ পেরেকটাও ঠুকে দিলেন মিরাজ।
এ নিয়ে এক ইনিংসে চার উইকেট শিকার করলেন টাইগার এই অলরাউন্ডার। এ ছাড়া তিনটি উইকেট তুলে নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। সাকিব-মিরাজ তোপে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৪৬ রানে থামল শান মাসুদের দল। স্বাগতিকরা লিড নিতে পেরেছে কেবল ২৯ রান।
পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৩০ রান। এখনও এক সেশনের বেশি সময় বাকি আছে।
এর আগে প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ৬ উইকেটে ৪৪৮ রানের জবাবে অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিমের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করে বাংলাদেশ থেমেছিল ৫৬৫ রানে। এতে প্রথম ইনিংস থেকে ১১৭ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও তোপ দাগছে টিম টাইগার্স।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামা স্বাগতিকদের শুরুতেই বিপদে ফেলে দেন শরিফুল ইসলাম। চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে নিজেদের তৃতীয় ওভারেই এনে দেন সাফল্য। অসাধারণ বোলিংয়ে সাইম আইয়ুবকে ব্যক্তিগত ১ রানে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরান শরিফুল।আজ শেষ দিনের দ্বিতীয় ওভারে ব্রেকথ্রু এনে দেন হাসান মাহমুদ। পাকিস্তান অধিনায়কের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল জমা পড়েছিল লিটন দাসের গ্লাভসে। আম্পায়ার জোরাল আবেদনে সাড়া না দিলে রিভিউ নিয়ে সফল হয় বাংলাদেশ। তবে মাসুদের ক্যাচ নেওয়া লিটনই পরের ওভারে শরীফুলের বলে বাবর আজমের সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন।
প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও শূন্য রানে ফিরতে পারতেন। লিটনের হাতে জীবন পাওয়ার পরও অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি বাবর। নাহিদ রানার বলে বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় বাবরকে। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের ডেলিভারিতে কাভার ড্রাইভ করেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক। ঠিকঠাক খেলতে পারেননি। ব্যাটের কানায় লেগে আঘাত হানে লেগ স্টাম্পে। ৫০ বলে ২২ রান করেন বাবর।
বাবর আজমকে ফিরিয়ে পাকিস্তানের জুটি ভাঙার পরের ওভারেই শূন্য রানে সাউদ শাকিলকে ফেরান সাকিব। প্রথম ইনিংসে ১৪১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন শাকিল। পাকিস্তানের পরের উইকেটটাও পকেটে পুড়েছেন সাকিব। তেড়েফুঁড়ে বড় শট খেলতে গিয়েই উইকেটটা বিসর্জন দিলেন আব্দুল্লাহ শফিক। এর মধ্য দিয়ে রেকর্ডের পাতায় নিজের নামটা তুলেছেন সাকিব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট এখন তার। এই মুহূর্তে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উইকেট সংখ্যা ৭০৬।
সাকিব পেছনে ফেলেছেন নিউজিল্যান্ডের কিংবদন্তি স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টোরিকে। ৩০৫ ওয়ানডে, ৩৬২ টেস্ট আর ৩৮ টি-টোয়েন্টি উইকেট মিলিয়ে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার ছিল ভেট্টোরির। রাওয়ালপিন্ডিতে আব্দুল্লাহ শফিকের উইকেট নিয়ে কিউই স্পিনারকে পেছনে ফেললেন বাংলাদেশের অলরাউন্ডার।
লাঞ্চব্রেকের আগে পাকিস্তান শিবিরে আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজও। সাকিবের পরপর ২ উইকেটে এমনিতেই ব্যাকফুটে ছিল পাকিস্তান। স্বাগতিকদের আরও বিপদে ফেলে দেন মিরাজ। তার বলে স্লিপে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে আগা সালমানকে ফিরিয়েছেন সাদমান ইসলাম।
মধ্যাহ্ন বিরতির আগে যেখানে শেষ করেছিলেন, বিরতি থেকে ফিরে সেখান থেকেই শুরু করলেন মিরাজ। ঠিকঠাক ব্যাটে লাগাতে পারেননি শাহিন আফ্রিদি। বল গিয়ে আঘাত হানে প্যাডে। এলবিডব্লু হয়ে ফিরেছেন শাহিন। মিরাজের পর আবারও উইকেটের উৎসব সাকিবের। হাওয়ায় ভাসানো বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে মুশফিকের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দেন।
বাকি কাজটা একাই সারলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। একে একে ফেরালেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও মোহাম্মদ আলিকে। সাকিব ও মিরাজ দুজনে মিলেই নিলেন ৭ উইকেট। বাকি তিনটি উইকেট শিকার করেছেন যথাক্রমে শরিফুল, হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানা।
এফআই