পশ্চিমা বিশ্বকে ‘পারমাণবিক হামলার’ হুঁশিয়ারি পুতিনের

পশ্চিমা বিশ্বকে ‘পারমাণবিক হামলার’ হুঁশিয়ারি পুতিনের

ইউক্রেনের সঙ্গে আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে লড়াই চলছে রাশিয়ার। আর সেই লড়াইয়ে ইউক্রেনকে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের একাধিক দেশ।

ইউক্রেনের সঙ্গে আড়াই বছরেরও বেশি সময় ধরে লড়াই চলছে রাশিয়ার। আর সেই লড়াইয়ে ইউক্রেনকে সহায়তা করছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের একাধিক দেশ।

এমনকি রাশিয়ার ওপর ক্রুজ মিসাইল হামলা নিয়ে ইউক্রেনকে গ্রিন সিগন্যাল দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। আর এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

রীতিমতো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নিয়ম ও পূর্বশর্ত পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বুধবার পশ্চিমা বিশ্বকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যদি প্রচলিত ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ায় আঘাত করা হয় তাহলে জবাবে রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে এবং কোনও পরমাণু শক্তিধর দেশের সমর্থনে যদি কোনও দেশ রাশিয়ায় হামলা চালায়, তবে তারা সেটি যৌথ হামলা বলে বিবেচনা করবেন।

অর্থাৎ রুশ ভূখণ্ডে মিসাইল হামলা চালানো হলে জবাবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে রাশিয়া।

সংবাদমাধ্যম বলছে, বুধবার রাশিয়ার নিরাপত্তা কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। সেখানে তিনি জানান, কোনও পরমাণু শক্তিধর দেশের সমর্থনে যদি অন্য কোনও দেশ রাশিয়ায় হামলা চালায়, তবে তারা সেটিকে যৌথ হামলা বলে বিবেচনা করবেন তারা। আর সেক্ষেত্রে তারা পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবেন।

মূলত ইউক্রেনকে ক্রুজ মিসাইল দিয়েছে ব্রিটেন। সেগুলো রাশিয়ায় হামলা চালাতে ব্যবহার করা নিয়ে সম্প্রতি জল্পনা বেড়েছে। আর গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে যান ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। সেখানে তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।

একটি রিপোর্ট বলছে, শক্তিশালী এই দুই রাষ্ট্রনেতা রাশিয়ার ভূখণ্ডে ইউক্রেনের হামলা নিয়ে আলোচনা করেন। আবার কয়েকদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সেখানে তিনি ইউক্রেনের দ্রুত এবং নিরবিচ্ছিন্ন সামরিক সাহায্যের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।

এই পরিস্থিতিতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বকে হুঁশিয়ারি দিলেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। তথ্য বলছে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে রাশিয়ার কাছে। বিশ্বের মোট পারমাণবিক অস্ত্রের ৮৮ শতাংশই রয়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে।

মূলত চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনকে সাহায্য করার পরিণাম সম্পর্কে আগেভাগেই হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন পুতিন।

বিবিসি জানিয়েছে, রাশিয়া তার পারমাণবিক অস্ত্রাগার ব্যবহার করবে এমন নিয়ম এবং পূর্বশর্তগুলো পরিবর্তন করার বিষয়ে তার সরকার বিবেচনা করছে বলে বুধবার রাতে দেওয়া বক্তব্যে জানিয়েছে পুতিন। ইউক্রেন একটি অ-পারমাণবিক রাষ্ট্র যা যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশগুলোর কাছ থেকে সামরিক সহায়তা পায়।

এছাড়া প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছ থেকে এই মন্তব্যটি ঠিক এমন এক সময়ে এলো যখন রাশিয়ার সামরিক স্থাপনায় হামলা চালাতে দূরপাল্লার পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন চাচ্ছে ইউক্রেন।

এদিকে পুতিনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাক বলেছেন, “বিশ্বকে ভয় দেখানোর জন্য পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল করা ছাড়া রাশিয়ার কাছে আর কিছু নেই”।

অবশ্য প্রেসিডেন্ট পুতিন এর আগেও পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি দিয়েছেন। ইউক্রেনকে তার মিত্রদের আরও সমর্থন দেওয়া থেকে বিরত রাখতে এটিকে “পারমাণবিক স্যাব্রে-র‌্যাটলিং” বলেও সমালোচনা করেছে কিয়েভ।

তবে রাশিয়ার মিত্র চীন সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে পুতিনকে সতর্ক করেছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

টিএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *