নেপালে খেলোয়াড়-কোচ ‘যুদ্ধ’, বাফুফে ব্যস্ত নির্বাচনে

নেপালে খেলোয়াড়-কোচ ‘যুদ্ধ’, বাফুফে ব্যস্ত নির্বাচনে

ফুটবল সংগঠক-সাবেক খেলোয়াড়রা ব্যস্ত বাফুফে নির্বাচন নিয়ে। নেপালের কাঠমান্ডুতে নারী ফুটবলার-কোচ মেতেছেন পাল্টাপাল্টি অভিযোগে। বাংলাদেশ ফুটবলের সামগ্রিক চিত্র এখন এমনই। 

ফুটবল সংগঠক-সাবেক খেলোয়াড়রা ব্যস্ত বাফুফে নির্বাচন নিয়ে। নেপালের কাঠমান্ডুতে নারী ফুটবলার-কোচ মেতেছেন পাল্টাপাল্টি অভিযোগে। বাংলাদেশ ফুটবলের সামগ্রিক চিত্র এখন এমনই। 

২০২২ সালে সাবিনা খাতুনরা সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। এবার সেই নেপালেই শিরোপা ধরে রাখার মিশনে গেলেও নিজেদের মধ্যে নেই ঐক্য। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ ড্রয়ের পর মনিকা চাকমা কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সিনিয়র-জুনিয়র খেলোয়াড় নিয়ে কোচের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি প্রকাশ করেন। তার ওই মন্তব্যের পর ফুটবলাঙ্গনে সৃষ্টি হয় আলোচনা-সমালোচনা। এর মধ্যে নারী দলের ব্রিটিশ কোচ  পিটার জেমস বাটলার আরেক গণমাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থন করে সাক্ষাৎকার দেন। যেখানে তিনি খেলোয়াড়দের রাজনীতির জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হওয়া দরকার বলে জানান।

কোচের এমন সাক্ষাৎকারের পর আরেকটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন দলের সিনিয়র খেলোয়াড় সানজিদা আক্তার। সেখানেও কোচের প্রতি নানা অভিযোগ। কাঠমান্ডুতে খেলা ছাপিয়ে কোচ-খেলোয়াড় দ্বন্দ্বই এখন আলোচনায় শীর্ষে। টুর্নামেন্ট চলাকালে প্রায় প্রতিদিনই ফুটবলারদের মিডিয়ার সামনে আনে বাফুফে। পাকিস্তান ম্যাচের পর মনিকা চাকমাকে এনেছিলেন নারী সাফে বাফুফে মিডিয়া ম্যানেজার খালিদ মাহমুদ নওমী। আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ের পর মনিকা কাঠমান্ডুতে উপস্থিত সাংবাদিকদের সিনিয়র-জুনিয়র গ্রুপিংয়ের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন।

সেখানে মনিকার অপরিপক্বতার পাশাপাশি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজম্যান্টের অপেশাদারিত্বেরও প্রকাশ পেয়েছে। কাঠমান্ডু সাফে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার হিসেবে আছেন অনন্যা। যিনি মূলত সহকারী কোচ। ম্যানেজার হিসেবে অভিজ্ঞতা না থাকায় অনন্যার এরকম পরিস্থিতি এবারই প্রথম। ফলে খেলোয়াড়-কোচ দ্বন্দ্বের বিষয়টি তিনি টুর্নামেন্ট চলাকালে প্রকাশ্যে আসতে বাধা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

ফুটবল বিশ্বে দল গঠন ও একাদশ নির্বাচনে কোচই শেষ কথা। ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার এই দায়িত্বে অত্যন্ত পেশাদার ও উঁচু মাপের। দুই বছর আগের চ্যাম্পিয়ন বা সেরা নয়, বর্তমান ফিটনেস এবং পারফরম্যান্সই মূখ্য, বিষয়টি বাস্তবিক ও যৌক্তিক হলেও কোচ পিটার নিজেও অপেশাদার আচরণ করেছেন। টুর্নামেন্ট চলাকালেই খেলোয়াড়দের অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছেন। সেটা আনুষ্ঠানিক কোনো সংবাদ সম্মেলনে নয়, একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে।

জাতীয় দলের ক্যাম্প চলাকালে খেলোয়াড়-কোচকে সাক্ষাৎকার বা বিশেষ মন্তব্য দিতে হলে মিডিয়া ম্যানেজার-ম্যানেজারের অনুমতি আবশ্যক। টুর্নামেন্ট চলাকালে খেলোয়াড়-কোচ সাক্ষাৎকার দিয়ে বেড়ালেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবহিতই নন। খেলোয়াড়-কোচ কোড অব কন্ডাক্ট যেমন ভঙ্গ করছেন, তেমনি নারী সাফের টিমের সঙ্গে যারা কর্মকর্তা হিসেবে রয়েছেন তারা অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। 

বাংলাদেশের নারী ফুটবলে অলিখিত সর্বেসর্বা বাফুফে নির্বাহী সদস্য ও নারী উইংয়ের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ। তিনি বাফুফে সদস্য পদপ্রার্থী। তার মনোযোগ এখন নিজের নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার দিকেই। এরপরও তার দাবি, ‘আমি খেলোয়াড়, কোচের সঙ্গে কথা বলেছি। এসব বিষয় বাদ দিয়ে খেলায় মনোযোগ দেয়ার অনুরোধ করেছি।’ বাফুফের সঙ্গে কোচ-খেলোয়াড়দের আনুষ্ঠানিক চুক্তি রয়েছে। সেই চুক্তিতে রয়েছে নানা শর্ত। গত দুই-তিন দিনের আচরণ ও কর্মকাণ্ডে সেই চুক্তি স্বাভাবিকভাবেই ভঙ্গ হয়েছে। এরপরও বাফুফে নিশ্চুপ। নির্বাহী কর্মকর্তাদের মতো প্রশাসনিক ব্যক্তিরাও নির্বাচনমুখী বলে বোঝা গেল সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষারের কথায়, ‘খেলোয়াড়-কোচ উভয় পক্ষকেই সতর্ক করা হয়েছে, আমাদের যেন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য না করা হয়।’ 

এজেড/এএইচএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *