‘আমার অনেক ইচ্ছা ছিল মেয়েটাকে শিক্ষিত করবো। অনেক কষ্ট করে পড়াশুনাও করাইছি। কিন্তু আমার সেই ইচ্ছা আর পূরণ হইলো না। নিজের রেজাল্টটাও দেখে যেতে পাড়লো না। নাফিসার মৃত্যুর সঙ্গে আমার স্বপ্নও ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে’
‘আমার অনেক ইচ্ছা ছিল মেয়েটাকে শিক্ষিত করবো। অনেক কষ্ট করে পড়াশুনাও করাইছি। কিন্তু আমার সেই ইচ্ছা আর পূরণ হইলো না। নিজের রেজাল্টটাও দেখে যেতে পাড়লো না। নাফিসার মৃত্যুর সঙ্গে আমার স্বপ্নও ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে’
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাতে মোবাইল ফোনে ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদকের কাছে এভাবেই বলছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত নাফিসা হোসেন মারওয়ার বাবা আবুল হোসেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট সাভারে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন নাফিসা হোসেন মারওয়ার। তিনি গাজিপুরের টঙ্গী এলাকার শাহাজউদ্দিন সরকার স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছিলেন।
মঙ্গলবার এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা হলে নাফিসা ৪.২৫ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ হন। নাফিসা ও তার ছোট বোন রাইসাকে নিয়ে বাবা আবুল হোসেন টঙ্গীর এরশাদনগর বস্তি এলাকার আট নম্বর ব্লকে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
নাফিসার বাবা আবুল হোসেন বলেন, আমি ছোট একটা চায়ের দোকান করি, আর নাফিসার মা সংসার চালানোর জন্য দেশের বাইরে থাকেন। কিন্তু মেয়েদের কখনো অভাব-অনটন বুঝতে দেইনি। আমার দুই মেয়ে, তাদের কখনো সংসারের কাজও করতে দেইনি। আমার ইচ্ছা ছিল, মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করবো। কিন্তু আমার ভাগ্যই খারাপ।
এ সময় তিনি আরও বলেন, প্রথম ১৮ জুলাই নাফিসা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উত্তরায় যোগ দিয়েছিল। এরপর যখন বাসায় আসে তখন আমি বাঁধা দিয়েছি। নাফিসার মামার বাড়ি ঢাকার সাভারে। নাফিসা স্কুলে পড়াশুনা করেছে সাভারেই। হঠাৎ ৩ আগস্ট নাফিসা সাভারে চলে আসে। এরপরে ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়। সেদিনই নাফিসার মৃত্যু হয়েছে বলে নিজের কষ্টের কথা জানান বাবা আবুল হোসেন।
লোটন আচার্য্য/এএমকে