নতুন এই বাংলাদেশের গতিপথ কেউ রুখতে পারবে না

নতুন এই বাংলাদেশের গতিপথ কেউ রুখতে পারবে না

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং ফরিদপুর অঞ্চলের পরিচালক ও সাবেক সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতার মাধ্যমে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে। দেশের জনগণ মুক্ত হয়েছে। মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেয়েছে। নিরাপদে বসবাসের সুযোগ লাভ এবং পথচলা শুরু করেছে। বাংলাদেশের নবযাত্রা শুরু হয়েছে শহীদদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে—নতুন এই বাংলাদেশের গতিপথ কেউ রুখতে পারবে না।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং ফরিদপুর অঞ্চলের পরিচালক ও সাবেক সংসদ সদস্য এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতার মাধ্যমে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে। দেশের জনগণ মুক্ত হয়েছে। মানুষ কথা বলার অধিকার ফিরে পেয়েছে। নিরাপদে বসবাসের সুযোগ লাভ এবং পথচলা শুরু করেছে। বাংলাদেশের নবযাত্রা শুরু হয়েছে শহীদদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে—নতুন এই বাংলাদেশের গতিপথ কেউ রুখতে পারবে না।

শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জেলা শহরের পৌর কমিউনিটি সেন্টারে রাজবাড়ী পৌর ও সদর উপজেলা জামায়াতের আয়োজনে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, বিগত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিন তিনটি নির্বাচন হয়েছে। সেই নির্বাচনগুলো নির্বাচন তো নয়ই, যেন নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। গত সাড়ে ১৫ বছর দেশে আওয়ামী দুঃশাসন কায়েম ছিল। এই শাসন ব্যবস্থার অধীনে বাংলাদেশ একটি জাহান্নামের রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল। মানুষ জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়ে অধিকার হারা জাতিতে পরিণত হয়েছিল।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার শুধু ভোটাধিকার হরণ করে নাই, মানুষ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে তাদেরকে বছরের পর বছর কারাগারে নির্যাতন করা হয়েছে। আয়নাঘর তৈরি করে তাদের গুম করে বন্দি করে তাদের মানবতার জীবনযাপনে বাধ্য করা হয়েছে। ওই সময় আমাদের নিরপরাধ নেতৃবৃন্দকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলানো হয়েছে। মিথ্যা বানোয়াট মামলা ও মিথ্যা সাক্ষী জোগাড় করে ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে এই নিষ্পাপ মানুষগুলোকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে। মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মাহমুদ মুজাহিদ, আব্দুল কাদের মোল্লা, কামারুজ্জামান, মীর কাসেম আলী, গোলাম আযম—এরা জামাতের শীর্ষস্থানীয় নেতা ছিলেন। তাদেরকে আওয়ামী লীগ সরকার ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সবচেয়ে নির্যাতিত,  নিষ্পেষিত দল বাংলাদেশ জামাত ইসলামী।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, গত ১৫ বছরের একজন প্রধানমন্ত্রী এবং ১৯৪৯ সাল থেকে আজকের এই সময় পর্যন্ত প্রায় শতাব্দীর কাছাকাছি সময়ের একটি প্রাচীন দলের নেত্রী এমন অসহায়ভাবে পালিয়ে গেলেন, নেতাকর্মীদের কোনো নির্দেশনা দিতে পারলেন না। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে উল্লেখযোগ্য চারটি হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর হত্যাকাণ্ড। সে সময় ৫৭ জন সামরিক চৌকস মেধাবী অফিসারকে তারা মেরে ফেলে। প্রকৃত অর্থে এটা একটি গণহত্যা। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম জমায়েত হয়েছিল। সে সময় শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আওয়ামী লীগ সরকার হামলা চালিয়ে শাপলা চত্বরকে রক্তে রঞ্জিত করেছিল। শতশত মানুষকে খুন করা হয়েছিল, তাদের মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায় নাই। এটি ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে একটি জঘন্যতম গণহত্যা। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আরেকটি গণহত্যা হয়েছিল আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার দিন। সেদিন সারা বাংলাদেশ উত্তপ্ত হয়েছিল। সর্বশেষ গণহত্যা হয়েছে ২০২৪-এর জুলাই ও আগস্ট মাসে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দমাতে ফ্যাসিস্ট সরকার পুলিশ বাহিনী, ছাত্রলীগ বাহিনী দিয়ে গণহত্যা চালিয়েছিল, আমরা সেটা দেখেছি। এই গণহত্যার পরেও ছাত্র-জনতা দমে যায়নি। তাদের আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হলেও দেশ ষড়যন্ত্র থেকে এখনো মুক্ত হয়নি। এখনো ফ্যাসিবাদের প্রেতাত্মারা জায়গায় জায়গায় বসে আছে। তাই আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। দেশকে পাহারা দিতে হবে। পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে। আমাদেরকে আগামী দিনে এই বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে হবে। যেই বাংলাদেশ হবে সম্প্রীতির বাংলাদেশ, সমৃদ্ধির বাংলাদেশ, যেই বাংলাদেশ হবে সৌহার্দ্যের বাংলাদেশ, যেই বাংলাদেশ হবে ভ্রাতৃত্ববোধের বাংলাদেশ। যেই বাংলাদেশ হবে শান্তির বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজবাড়ী সদরের আমির মওলানা সৈয়দ আহম্মেদ খানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ফরিদপুর অঞ্চল সহকারী মো. দেলোয়ার হুসাইন, কেন্দ্রীয় মজলিশের শুরা সদস্য ও ফরিদপুর অঞ্চলের টিম সদস্য অধ্যাপক আবদুত তাওয়াব, জামায়াতে ইসলামী রাজবাড়ী জেলার আমির অ্যাড. মো. নুরুল ইসলাম।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজবাড়ী পৌরসভার আমির ডা. মো. হাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, ফরিদপুর অঞ্চলের টিম সদস্য মো. সামসুল ইসলাম আল বরাটি, ফরিদপুর জেলা জামায়াতের আমির মওলানা মো. বদর উদ্দিন, জেলার কর্মপরিষদ সদস্য ও সাংগঠনিক সেক্রেটারি মো. হারুনর রশীদ, ইসলামি ছাত্র শিবির জেলার সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম।

এ সময় রাজবাড়ী জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. আলিমুজ্জামান, রাজবাড়ী জেলা নায়েবে আমির মো. হাসমত আলী হাওলাদার, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য প্রফেসর হেলাল উদ্দিন, বালিয়াকান্দি উপজেলা আমির আব্দুল হাই জোয়ারদার, রাজবাড়ী পৌর সেক্রেটারি মওলানা লিয়াকত আলী, পাংশা উপজেলার আমির সুলতান মাহমুদ, পাংশা থানার সেক্রেটারি মওলনা আমজাদ হোসেন, পাংশার পৌর আমির ফরহাদ জামিল রুপু, পাংশা পৌর সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হালিম, গোয়ালন্দ উপজেলা আমির গোলাম আজম, কালুখালী উপজেলার আমির মওলানা আব্দুর রবসহ জামায়াতে ইসলামী ও অঙ্গ সংগঠনের জেলা, উপজেলা, পৌর শাখার সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *