নওগাঁয় ঐতিহ্যবাহী হাঁস ধরা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জেলার সদর উপজেলার কাদোয়া গ্রামে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাদোয়া যুব কল্যাণ সংঘ। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে এই প্রতিযোগিতা দেখতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পুকুর পাড়ে ভিড় জমায় হাজারো উৎসুক জনতা।
নওগাঁয় ঐতিহ্যবাহী হাঁস ধরা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জেলার সদর উপজেলার কাদোয়া গ্রামে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাদোয়া যুব কল্যাণ সংঘ। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে এই প্রতিযোগিতা দেখতে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত পুকুর পাড়ে ভিড় জমায় হাজারো উৎসুক জনতা।
প্রতিযোগিতায় দুই দফায় পুকুরে দুইটি হাঁস ছেড়ে দেন আয়োজকরা। এরপরই ওই হাঁস ধরতে ঝাঁপিয়ে পড়েন ১০০ জনের দুইটি দল। পুকুরের চারপাশে জড়ো হওয়া দর্শকরা খেলোয়াড়দের উৎসাহ দিতে হাত তালি দিতে থাকেন। এভাবে ১ম দফায় একটি হাঁস ধরে বিজয়ী হন সিয়াম হোসেন। পরে ২য় দফায় আরেকটি হাঁস ধরে বিজয়ী হন নাসির হোসেন নামে আরেক যুবক।
এ সময় জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও সম্মিলিত পাঠাগার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রহমান রায়হান, নগর কৃষি নগর চাষি নওগাঁর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, কাদোয়া যুব কল্যাণ সংঘের প্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী মাহফুজ হোসেন, সভাপতি মোবাশে^র হোসেন, সাধারণ সম্পাদক নাইম হোসেনসহ সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চন্ডিপুর ইউনিয়নের চুনিয়াগাড়ী গ্রাম থেকে আসা দর্শক আশিক আরমান বলেন, সকালে বন্ধুদের মাধ্যমে জানা মাত্রই দুপুর ১টার মধ্যে ওই প্রতিযোগিতা দেখতে ছুটে গিয়েছি। বৃষ্টিতে ভিজে এভাবে আগে কখনো কোনো প্রতিযোগিতা দেখার সুযোগ হয়নি। লাফিয়ে লাফিয়ে হাঁস ধরার যে শত চেষ্টা খেলোয়াড়রা করেছেন, সেই দৃশ্য সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে।
শহরের হাট নওগাঁ মহল্লা থেকে হাঁস ধরা প্রতিযোগিতা দেখতে আসা কলেজ শিক্ষার্থী রবিউল আউয়াল মাহি বলেন, পুকুরে দলবেঁধে নেমে হাঁসকে টার্গেট করে ধরার এমন প্রতিযোগিতা আগে কখনো দেখিনি। শহরের কাছাকাছি এমন ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতা দেখার সুযোগ পাওয়াটা সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। দারুণভাবে খেলাটি উপভোগ করেছি। এমন আয়োজন নিয়মিত করা উচিত।
কাদোয়া যুব কল্যাণ সংঘের প্রতিষ্ঠাতা ও হাঁস ধরা প্রতিযোগিতার আয়োজক প্রকৌশলী মাহফুজ হোসেন বলেন, গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে ও বিলুপ্তপ্রায় খেলাগুলো তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন। সারাদিন থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও দর্শকরা ঘরে বসে থাকেনি। হাজারো মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসে খেলা উপভোগ করেছেন।
এই প্রতিযোগিতা ছাড়াও দেশে বিলুপ্ত প্রায় অন্যান্য খেলাগুলোও আগামীতে আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ইউনাইটেড প্রেস ক্লাব নওগাঁর সভাপতি সাব্বির আহমেদ বলেন, বর্তমান সময়ের শিশু-কিশোররা প্রত্যেকেই মোবাইল ফোনে আসক্ত। ফোনে গেইম খেলা, সিনেমা ও নাটক দেখতেই জীবনের মূল্যবান সময় পার করে দিচ্ছে তারা। সেই সময়ে এসে হাঁস ধরা খেলার মতো প্রতিযোগিতা আয়োজন অনেকটাই প্রশংসনীয়। নিয়মিত এসব খেলার আয়োজন করা হলে বর্তমান তরুণ সমাজ মাদক থেকে দূরে থাকবে। স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি কমবে। তাই এসব আয়োজনে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।
আরমান হোসেন রুমন/এমএ