দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১২৭ নাগরিকের আহ্বান

দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ১২৭ নাগরিকের আহ্বান

ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১২৭ জন নাগরিক।

ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১২৭ জন নাগরিক।

তারা বলেছেন, দুর্গাপূজায় হিন্দু সম্প্রদায় যাতে তাদের আচার-অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে পারে, সে জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের একটি বড় দায়িত্ব। কোনো ধরনের হুমকি বা বাধা ছাড়াই তারা যেন পূজা উদযাপন করতে পারে, সে বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে।

মঙ্গলবার বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। নিরাপত্তা দেওয়ার নামে উৎসব উদযাপনে যেন কোনো গোষ্ঠীর বিন্দুমাত্র সমস্যা না হয়, সেটি নিশ্চিত করার আহ্বানও জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে সম্প্রতি শহর, গ্রাম ও পাহাড়সহ দেশের নানা অঞ্চলে বিভিন্ন ধর্মের আচার-অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা নিয়ে আশঙ্কা পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশেষ করে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠান এবং দুর্গাপূজার উদযাপন নিয়ে নাগরিক উৎকণ্ঠার মাত্রা এখন সর্বোচ্চ। এতে মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা সংকুচিত হয়ে পড়েছে ও নিরাপত্তাহীনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।’

একটি গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সহাবস্থানের পরিবেশকে বিনষ্ট করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ওই গোষ্ঠী নিজেদের গোষ্ঠীগত মতবাদকে অন্যদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে পারস্পরিক ধর্মীয় সহনশীলতা ও সামাজিক শান্তি বিঘ্নিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। এর ফলে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে এবং সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের সামগ্রিক নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। এ ধরনের অপতৎপরতা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রত্যাবর্তনের আকাঙ্ক্ষা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করছে।’

ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে বাংলাদেশের শক্তি আখ্যা দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সেই শক্তিকে নস্যাৎ করার যেকোনো প্রচেষ্টার আমরা তীব্রভাবে নিন্দা জানাই। আমরা আশা করি, গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার অন্তর্ভুক্তিমূলক সামাজিক অংশীদারত্বের ভারসাম্য বজায় রেখে এ বিষয়ে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।’

দুর্গাপূজা উদযাপন শুরু হওয়ার আগেই বেশ কিছু প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে বারবার পর্যাপ্ত প্রস্তুতির কথা বলা হলেও ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। একই সঙ্গে এটি খেয়াল রাখা জরুরি যে নিরাপত্তা দেওয়ার নামে যেন উৎসব উদযাপনে কোনো গোষ্ঠীর বিন্দুমাত্র সমস্যা না হয়।’  

বিবৃতিদাতাদের মধ্যে আছেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক আ-আল মামুন, সাংবাদিক আশরাফ কায়সার, আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, শিক্ষক ও নাট্যকর্মী সামিনা লুৎফা, লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা, লেখক কল্লোল মোস্তফা, গবেষক ও মানবাধিকারকর্মী রেজাউর রহমান লেনিন, লেখক ও সংগঠক সারোয়ার তুষার, সংস্কৃতিকর্মী জামসেদ আনোয়ার ও আরিফ নূর, কবি রহমান মফিজ এবং আইনজীবী মানজুর আল মতিন।

এসকেডি

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *