দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে এ পর্যন্ত মোট ২৫ ট্রাক ত্রাণ সামগ্রী পাঠিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাছাড়া, নগদ পাওয়া অর্থ ও ত্রাণ সামগ্রী প্যাকেটিং করে বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। গণত্রাণ কর্মসূচি থেকে দুই দিনে এই বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহ করা হয়।
শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে এসব তথ্য জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক মো. মহিউদ্দিন। ত্রাণ সামগ্রী ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, গত দুইদিনে আমরা জন সাধারণের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। মানুষ তাদের সাধ্য অনুযায়ী যে যা পেরেছে দান করেছে। আজ ভোত রাত পর্যন্ত আমরা ২৫ ট্রাক ত্রাণ সামগ্রী পাঠাতে পেরেছি। ইতোমধ্যে টিএসসি ক্যাফেটেরিয়া, গেমস রুম ও বারান্দাগুলো পূর্ণ হয়ে আছে। আজকে রাতে আবারও ডজনখানেক ট্রাক বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকায় পৌঁছে যাবে। ছাত্র-জনতার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠবো।
এদিকে, আজ শনিবার গণত্রাণ কর্মসূচির তৃতীয় দিন সকাল থেকেই টিএসসিতে ত্রাণ দিতে মানুষের ঢল নামে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে ব্যক্তিগত গাড়ি, ট্রাক, সিএনজি, ভ্যান ও রিক্সায় বন্যার্তদের জন্য খাবার, জামা-কাপড়, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে আসছেন। বিকেলে বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সংগ্রহ করতে হিমশিম খেতে দেখা যায় স্বেচ্ছাসেবকদের। আজ বিকেলে পৌনে ৫টার দিকে র্যাবের পক্ষ থেকেও দুই ট্রাক ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে আসা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দেওয়া তথ্য মতে, গতকাল ২য় দিনে সাহায্য পাওয়া মোট নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল ১ কোটি ২৬ লাখ ২২ হাজার ১৭২ টাকা।
দিনভর বিপুল পরিমাণ ত্রাণ সামগ্রী আসায় টিএসসি ক্যাফেটেরিয়া ও গেমস রুম এবং বারান্দাও ত্রাণ সামগ্রীতে পূর্ণ হয়ে যায়। টিএসসির বারান্দাতে ত্রাণ সামগ্রী বিশাল স্তূপ লক্ষ্য করা যায়। বিপুল পরিমাণ জরুরি ওষুধ টিএসসির দ্বিতীয় তলায় রাখা হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকরা দুইটি মানব লাইন তৈরি করে টিএসসি গেট থেকে ভেতরে ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন। বর্তমানে টিএসসি মাঠে স্বেচ্ছাসেবকরা ত্রাণ সামগ্রী প্যাকেজিংয়ের কাজ করছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লুৎফর রহমান বলেন, গত দুইদিনে আমাদের কাছে ১ কোটি ৪২ লাখ টাকার বেশি টাকা পেয়েছি। আমরা ইতোমধ্যে ত্রাণ পৌঁছানো শুরু করেছি। দিনে ও রাত ১২টা পর্যন্ত প্যাকেজিং শেষ করে মধ্য বা শেষ রাতের দিকে ট্রাকে করে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বন্যাদুর্গত এলাকায়।
এ সময় তিনি সবাইকে কাপড়ের পরিবর্তে শিশু খাদ্য, ন্যাপকিন, জরুরি ওষুধ বেশি করে আনতে বলেন।
কেএইচ/এসকেডি