ছাত্রলীগ নিষিদ্ধের খবরে ফেনীতে মিষ্টি বিতরণ

আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের খবরে ফেনীতে আনন্দ মিছিল করেছে ছাত্র-জনতা। গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আয়োজনে শহরের ট্রাংক রোডে উল্লাস করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা সেখানে মিষ্টি বিতরণও করেন।

মিছিল শেষে বক্তব্য রাখেন— বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল জুবায়ের, জামাল উদ্দিন ও সানী মজুমদার। 

আবদুল্লাহ আল জুবায়ের বলেন, ছাত্রলীগ গত ১৬ বছর ধরে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এবারের আন্দোলনেও ফেনীতে তারা ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে হামলা ও গুলি চালিয়ে আমাদের ভাইদের হত্যা করেছে। এ দেশ থেকে ছাত্রলীগ ও তার দোসরদের সমূলে উৎখাত করতে চাই। তখনই আমাদের ছাত্র-জনতার এতো আত্মত্যাগ সার্থক হবে। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি বুধবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলন থেকে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল। তার আগেই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল সরকার। রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা-পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ হত্যা, নির্যাতন, গণরুমকেন্দ্রিক নিপীড়ন, ছাত্রাবাসে সিট বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি, ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল এবং এ সম্পর্কিত প্রামাণ্য তথ্য দেশের সব প্রধান গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে এবং কিছু সন্ত্রাসী ঘটনায় সংগঠনটির নেতাকর্মীদের অপরাধ আদালতেও প্রমাণিত হয়েছে। গত ১৫ জুলাই থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রী ও সাধারণ জনগণকে উন্মত্ত ও বেপরোয়া সশস্ত্র আক্রমণ করে শতশত নিরপরাধ শিক্ষার্থী ও ব্যক্তিকে হত্যা করেছে এবং আরও অসংখ্য মানুষের জীবন বিপন্ন করেছে।

সরকারের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে যে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক, ধ্বংসাত্মক ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন সন্ত্রাসী কাজে জড়িত আছে। 

এই অবস্থায় সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং ওই আইনের তফসিল-২ এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

তারেক চৌধুরী/এনএফ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *