চেয়েছিলেন পরিবারের দারিদ্র্য ঘোচাতে, গুলিতে সব স্বপ্ন শেষ

চেয়েছিলেন পরিবারের দারিদ্র্য ঘোচাতে, গুলিতে সব স্বপ্ন শেষ

২৪ বছরের তরুণ রাজু আহমেদ ঢাকায় জননী কুরিয়ার সার্ভিসে বুকিং অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। তিন বছর আগে মা নাসিমা খাতুন বাড়িতে পাওয়ার টিলার দুর্ঘটনায় আহত হন। মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে পড়াশোনা ঠিকমতো চালাতে পারেননি রাজু। বাবা কালাম মোল্লা পেশায় একজন দিনমজুর। অন্যের জমিতে কাজ করেন।

২৪ বছরের তরুণ রাজু আহমেদ ঢাকায় জননী কুরিয়ার সার্ভিসে বুকিং অফিসার হিসেবে কাজ করতেন। তিন বছর আগে মা নাসিমা খাতুন বাড়িতে পাওয়ার টিলার দুর্ঘটনায় আহত হন। মায়ের চিকিৎসা করাতে গিয়ে পড়াশোনা ঠিকমতো চালাতে পারেননি রাজু। বাবা কালাম মোল্লা পেশায় একজন দিনমজুর। অন্যের জমিতে কাজ করেন।

পরিবারের অভাব দূর করতে দেশের বাইরে যেতে চেয়েছিলেন রাজু। আশা ছিল ভালো আয় করে পরিবারের দারিদ্র্য ঘোচাবেন।

এর মাঝে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে প্রতিদিনই রাজু কাজের ফাঁকে আন্দোলনে অংশ নিতেন বলে জানিয়েছেন তার ঘনিষ্ঠজনরা। গত ১৯ জুলাই রাজু কালো পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুর  এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন। সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। রাজুর বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার আজমপুর গ্রামে।

গ্রামবাসীরা জানান, রাজু জগদল সম্মিলনী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে মাগুরা আদর্শ কলেজে ডিগ্রিতে ভর্তি হন। কিন্তু পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে লেখাপড়ায় নিয়মিত হতে পারেননি।

অভাবের সংসারে অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে ডিগ্রি পড়াটা তার আর হয়ে ওঠেনি। দিনমজুর বাবার একার আয়ে ধারদেনা করে রাজুর বড় ভাইকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে তিন মাস আগে দেশে ফিরে আসেন তিনি। ফলে নিরুপায় হয়েই তিন মাস আগে ঢাকায় জননী কুরিয়ার সার্ভিসে কাজ নিয়ে বাড়ি ছাড়েন রাজু। গত ১৯ জুলাই ঢাকা মহম্মদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান রাজু।

রাজুর মা নাসিমা খাতুন বলেন, মৃত্যুর আগের দিন রাতেও রাজুর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। মোবাইলে সবার খবর নিয়েছে। সৌদি আরব যাওয়ার জন্য চেষ্টা করছিল সে। আমার ছেলের সে ইচ্ছা আর পূরণ হলো না। এক ছেলে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলো, আরেক ছেলে অসুস্থতা নিয়ে বিদেশ থেকে বাড়িতে এসেছে। আমি নিজেও খুব অসুস্থ। এখন আমরা কীভাবে চলবো?

তাছিন জামান/এমএ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *