স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তের জেলা কুমিল্লা। গোমতী নদী দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা থেকে আসা ঢলের পানিতে বন্যার ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এই জেলায়। ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতি। ক্ষণে ক্ষণে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তের জেলা কুমিল্লা। গোমতী নদী দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা থেকে আসা ঢলের পানিতে বন্যার ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এই জেলায়। ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতি। ক্ষণে ক্ষণে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
শনিবার (২৪ আগস্ট) রাত ৮টা পর্যন্ত জেলার ১৪টি উপজেলা প্লাবিত হওয়ার খবর দিয়েছে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়।
কার্যালয়টি জানিয়েছে, ১৭টি উপজেলার মধ্যে চান্দিনা, হোমনা এবং মেঘনা উপজেলা বাদে বাকি ১৪টি উপজেলা তলিয়েছে বানের পানিতে। এসব উপজেলার ১২১টি ইউনিয়ন, পৌরসভা এবং ওয়ার্ডের শত শত গ্রামে বন্যার তীব্রতা ছুঁয়েছে। সরকারি হিসেবে জেলায় মোট ৭ লাখ ৯৩ হাজার ১৪২ জন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বেসরকারি হিসেবে তা ১০ লাখের কাছাকাছি। চলমান বন্যায় জেলায় মোট ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪২৮টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, জেলাজুড়ে ৭২৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৫৫ হাজারের মতো বানভাসি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ হাজার ২৯২ জন পুরুষ, ২২ হাজার ১৯৭ জন নারী, ১২ হাজার ৫০৫ জন শিশু ও ২৮১ জন প্রতিবন্ধী আশ্রয় নিয়েছেন।
অপরদিকে উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহ না কমায় দিন দিন নতুন নতুন এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে বন্যার পানি। দুদিন ধরে বৃষ্টিপাত না হলেও বন্যার তীব্রতা কমেনি। নিম্নাঞ্চলে হু হু করে ঢুকছে বাদামি রঙের ঘোলাটে পানি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গোমতীর পানি এখনও বিপৎসীমার বেশ ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় গোমতীর পানি বিপৎসীমার ৯২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ঘন্টায় ১ সেন্টিমিটার করে কমছে নদীটির পানি।
গত বৃহস্পতিবার রাতে গোমতীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় নিন্মাঞ্চলে পানির প্রবাহ বেড়ে একটু করে কমছে গোমতীর পানি। বৃহস্পতিবার রাতে গোমতীর বাঁধ ভাঙার সময় নদীটির পানি বিপৎসীমার সর্বোচ্চ ১৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। গত ৪২ ঘণ্টায় পানি কমেছে ৪২ সেন্টিমিটার।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওয়ালিউজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোমতীর পানি এখনো বিপৎসীমার বেশ ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছি। পরিস্থিতি উন্নতি হতে সময় লাগবে। সবাইকে সম্মিলিতভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবেদ আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য সরকারিভাবে ১ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নগদ ৪৫ লাখ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মুশফিকুর রহমান বলেন, জেলার একজন ক্ষতিগ্রস্ত মানুষও যেন অভুক্ত না থাকে সে অনুযায়ী কাজ করছে জেলা প্রশাসন।
আরিফ আজগর/আরএআর