ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এসএম আমিরুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এসএম আমিরুল ইসলামের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১২ আগস্ট) সকালে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে দপুর ২টা পর্যন্ত অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এসময় অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে শোনা যায় তাদের।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় বর্তমান অধ্যক্ষ এর বিরোধিতা করেছেন। তিনি প্রথমে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে সরে আসতে নোটিশ দিয়েছিলেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় তিনি শিক্ষার্থীদের দমনে ছাত্রলীগ নেতাদের সহযোগিতা নেন। এতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলায় অনেক শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন।
তাহমিদ রহমান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের মতো যৌক্তিক একটি বিষয়ে তিনি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের শিক্ষার্থীদের পেছনে লেলিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের পরিচয় ব্যবহার করেও তিনি বিভিন্ন অনিয়ম করেছেন। যে কারণে আমরা তার পদত্যাগ চাচ্ছি। পদত্যাগ করতেই হবে। ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠান যোগ্য ব্যক্তিদের পরিচালনার দায়িত্ব নিতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের দমাতে তিনি বস্তা ভর্তি পাথর কলেজের বিভিন্ন ভবনের ছাদে রেখে দেন। এ ছাড়াও ছিল কাঁচের বোতল। এগুলো আনা হয়েছিল ছাত্রলীগের নেতাদের জন্য। তারা ছাদের ওপর থেকে এগুলো আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দমাতে ব্যবহার করেছে। তাছাড়া ওই সময় সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল বন্ধ থাকলেও ছাত্রলীগ নেতাদের অবস্থানের সুবিধার্থে তিনি বাঙলা কলেজের ছাত্রাবাস খোলা রেখেছেন। এসব কারণেই আমরা তার পদত্যাগ দাবি করছি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, অধ্যক্ষ এসএম আমিরুল ইসলাম আজ কলেজে আসেননি। সংশ্লিষ্টরা জানান মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এর আগে, কোটা সংস্কার আন্দোলন চলমান থাকা অবস্থায় গত মাসের ১৩ জুলাই (রোববার) বাঙলা কলেজের আন্দোলনে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার জন্য তিনি বিজ্ঞপ্তি দেন। অবশ্য আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ আগস্ট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলেন তিনি।
এসময় শিক্ষার্থীরা আরও বেশকিছু দাবিও তুলে ধরেন। দাবিগুলো হচ্ছে — ক্যাম্পাসে শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, ৬০ দিনের মধ্যে ‘বাঙলা কলেজ ছাত্র সংসদ’ চালু করে নির্বাচনের আয়োজন করা, কলেজ প্রশাসনকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে শহীদ শিক্ষার্থী সাগরের পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া, কলেজের নতুন ছাত্রাবাসের নাম ‘শহীদ সাগর ছাত্রাবাস’ হিসেবে নামকরণ করা এবং ক্যান্টিন ও লাইব্রেরি সংস্কার করে আধুনিকায়ন করা।
আরএইচটি/জেডএস