শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর সহিংসতায় পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে নিরাপত্তার কারণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এটিএম বুথ বন্ধ রেখেছে ব্যাংকগুলো। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর সহিংসতায় পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ফলে নিরাপত্তার কারণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এটিএম বুথ বন্ধ রেখেছে ব্যাংকগুলো। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা।
বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, হাতে গোনা দুই-একটা এটিএম বুথ খোলা থাকলেও বাকি সব বন্ধ রয়েছে। বন্ধ থাকা বেশিরভাগ ব্যাংকের বুথের নিরাপত্তাকর্মীদেরও পাওয়া যায়নি। যাদের পাওয়া গেছে তারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তার অভাবে বুথগুলোতে টাকা সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি।
দৈনন্দিন প্রয়োজনে নগদ টাকার জন্য গ্রাহকরা এটিএম বুথ ব্যবহার করেন। অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা বেতন তোলেন বুথ থেকে। ফলে বুথ থেকে টাকা তুলতে না পাড়ায় তারা ভোগান্তিতে পড়েন।
ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দীর্ঘদিন ব্যাংকিং কার্যক্রমে অচলাবস্থা নেমেছিল। তখন এটিএম বুথই ছিল ভরসা। তাই বুথে গচ্ছিত টাকা অনেক ব্যাংকের শেষ হয়ে গেছে। এরপর সরকার পতনের পর সহিংসতায় পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ। এখন নিরাপত্তার কারণে টাকা বুথে ঢুকাতে পারছে না। এমন পরিস্থিতির কারণে এটিএম বুথ বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে টাকা সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠান সিকিউরিক্স লিমিটেডের মতিঝিল এরিয়ার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার ঝুঁকি রয়েছে। তাই প্রয়োজন অনুযায়ী এটিএম বুথগুলোতে টাকা সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। চারটি ব্যাংকের এটিএম বুথে আগে ৩০ কোটি টাকা সরবরাহ করা হতো। কিন্তু আজ (বৃহস্পতিবার) মাত্র ১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক আজকে টাকা কম দিয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সর্বোচ্চ সীমা আরোপ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এক অ্যাকাউন্ট থেকে এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যায়নি। তবে, এ সিদ্ধান্ত শুধু বৃহস্পতিবারের জন্য প্রযোজ্য হবে বলে ব্যাংকগুলোকে খুদেবার্তা দেওয়া হয়।
খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা এমদাদুল হক। বৃহস্পতিবার বিকেলে বাজার করবে বলে এলাকার কয়েকটি বুথে ঘুরে টাকা তুলতে পারেননি। কারণ বেশিরভাগ বুথই ছিল বন্ধ। তিনি জানান, আমি টাকা নিয়ে বের হইনি, এটিএম থেকে টাকা তুলব বলে। কিন্তু সব বুথ বন্ধ এখন বাধ্য হয়ে বাসায় গিয়ে টাকা এনে বাজার করলাম। এ অবস্থা কয়দিন থাকে জানে কে?
একই ধরনের সমস্যার কথা জানান মোহাম্মাদপুরের বাসিন্দা আসিফ হোসেন। তিনি বলেন, এটিএম বুথের সুবিধার কারণে বেশি নগদ টাকা সঙ্গে রাখি না। সন্ধ্যায় আশপাশের এলাকার প্রায় ১০টি বুথ ঘুরেও টাকা তুলতে পারিনি। দু-একটি বুথ খোলা আছে কিন্তু কার্ড ঢুকালে দেখাচ্ছিল টাকা নেই। অনেক বুথ অন্য ব্যাংকের এটিএম কার্ড নিচ্ছে না।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, গত কয়েকদিন ধরে অপর্যাপ্ত নিরাপত্তার কারণে এটিএম বুথে টাকা পাঠানো যায়নি, তাই অনেক বুথে টাকা নেই। এমনকি ব্যাংকের অনেক শাখাতেও টাকার অভাব।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট রাজধানীর অনেক থানা খালি করে চলে যায় পুলিশ। পরদিন থেকে কর্মবিরতির ডাক দিলে সারা দেশ পুলিশশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে একটি নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে।
এসআই/এমএ