এখানেই শেষ হচ্ছে কানপুর স্টেডিয়ামের যাত্রা

এখানেই শেষ হচ্ছে কানপুর স্টেডিয়ামের যাত্রা

‘ম্যাচ অফিসিয়ালরা আমাদের তিনবার মাঠ পর্যবেক্ষণের কথা বলেছিল, তবে তারা জানাননি মাঠের ঠিক কোন অংশ ভেজা বা সমস্যা চলছে। আমি তাদের বলেছি , আপনারা চাইলে ম্যাচ শুরু করতে পারেন কিন্তু যদি আপনাদের কোনো চিন্তা থাকে, আমাকে জানাতে পারেন’– তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করতে না পারা নিয়ে এভাবেই বলছিলেন উত্তর প্রদেশের পিচ কিউরেটর শিব কুমার। 

‘ম্যাচ অফিসিয়ালরা আমাদের তিনবার মাঠ পর্যবেক্ষণের কথা বলেছিল, তবে তারা জানাননি মাঠের ঠিক কোন অংশ ভেজা বা সমস্যা চলছে। আমি তাদের বলেছি , আপনারা চাইলে ম্যাচ শুরু করতে পারেন কিন্তু যদি আপনাদের কোনো চিন্তা থাকে, আমাকে জানাতে পারেন’– তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করতে না পারা নিয়ে এভাবেই বলছিলেন উত্তর প্রদেশের পিচ কিউরেটর শিব কুমার। 

ভারত-বাংলাদেশ টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা মাঠে গড়ায়নি একেবারেই। যদিও সেদিন সকাল সাড়ে ৯টার পর থেকেই কোনো প্রকার বৃষ্টির কথা জানা যায়নি। আগের দিনের বৃষ্টির পানি পুরো দিনেও সরাতে পারেনি কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামের ৭৫ জন মাঠকর্মী। তাদের প্রচেষ্টার কমতি না থাকলেও ৭৯ বছরের পুরাতন এই স্টেডিয়ামের মাঠের অবস্থাই ছিল সঙ্গীন। 

দুই দলই দিন পার করেছে হোটেলে। আর ম্যাচ অফিসিয়ালরা ব্যস্ত সময় পার করেছেন মাঠে। এরইমাঝে প্রকাশ্যে আসে চুন, কাঠের গুড়ো আর চট দিয়ে মাঠ পরিচর্যার বিষয়টি। স্বাভাবিকভাবেই এমন ব্যবস্থাপনা নিয়ে সমর্থকদের কড়া সমালোচনার মাঝে পড়েন কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামের কর্তৃপক্ষ। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ডের অধীনে থাকা এক স্টেডিয়ামের এমন দূর্বল ব্যবস্থাপনার সমালোচনা করেছেন ক্রিকেট সমর্থকরা।  

মাঠের ডিপ মিড উইকেট অঞ্চলে পানি অবশ্য এমন প্রাণান্ত চেষ্টার পরেও সরাতে পারেনি কানপুরের মাঠকর্মীরা। একপর্যায়ে ম্যাচ রেফারি জেফ ক্রো, রিজার্ভ আম্পায়ার বীরেন্দ্রর শর্মা এবং টিভি আম্পায়ার রড টাকার সূর্যের আলোর জন্য অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও তাদের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেছিলেন মাঠকর্মীরা। তাদের দাবি ছিল এই মাঠে তখনই খেলা শুরু করা সম্ভব ছিল। 

বৃষ্টি না থাকার পরেও মাঠের এমন বাজে দশার কারণে কানপুর স্টেডিয়াম থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পুরোপুরি উঠিয়ে নেয়ার কথাও সামনে আসতে শুরু করেছে। ২০২১ সালে আলোকস্বল্পতার কারণে ভারত ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যেকার খেলা পুরোপুরি হয়নি। সেই ম্যাচের পথেই হাঁটছে বাংলাদেশ ও ভারতের এবারের টেস্ট। 

সবমিলিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের একাধিক সূত্রের খবর, এবারের পর থেকে কানপুরে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনই স্থগিত হয়ে যেতে পারে। ২০২১ সালের নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের পর থেকে এমনিতেই এই মাঠে নেই আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়োজন। এমনকি ঘরোয়া প্রতিযোগিতার ম্যাচও সেখানে হয়নি বিগত তিন বছরে। 

এমনকি বাংলাদেশের ম্যাচের দুদিন আগেও কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামের দু-একজন বলছিলেন, আবারও লজ্জার মুখে পড়তে হতে পারে তাদের। আর গ্যালারি নিয়েও আছে প্রশ্ন। ম্যাচ শুরুর দিনদুয়েক আগেই ভারতের উত্তর প্রদেশের পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্ট (পিডব্লিউডি) কানপুর স্টেডিয়ামের গ্যালারির একটি স্ট্যান্ডকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা দিয়েছে। গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামের বেলকনি ‘সি’ নিয়ে এই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কর্মকর্তাদের ধারণা, গ্যালারির ওই অংশে লোক সমাগম হলে পুরো জায়গাটি ধসে পড়তে পারে। 

উত্তর প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনও এই মাঠ নিয়ে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি সাম্প্রতিক সময়গুলো। রাজ্যের ঘরের মাঠ লক্ষ্ণৌতে, ৫০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার একানা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। যেটি উত্তর প্রদেশ ও আইপিএল দল লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টের হোম গ্রাউন্ড। এমনকি বিশ্বকাপের ম্যাচও আয়োজন করা হয়েছিল এখানে। স্বাভাবিকভাবেই ৭৯ বছরের পুরাতন গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামের দিন পার হয় ‘পরিত্যক্ত’ স্টেডিয়াম হিসেবে। 

একানা স্টেডিয়ামে এখন পর্যন্ত কেবল একটিই আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ হয়েছে। সেটাও আফগানিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যেকার ম্যাচ। তবে নিয়মিত রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ হচ্ছে সেখানে। অক্টোবরের ১ তারিখ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত হবে ইরানি কাপের ম্যাচ। এছাড়া আইপিএলে লখনৌ সুপারজায়ান্টস এবং বিশ্বকাপের ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছে এখানেই। উত্তর প্রদেশে পরবর্তী ম্যাচগুলোও তাই একানা স্টেডিয়ামের ভাগ্যে যেতে পারেই জানিয়েছে ভারতের বোর্ডের একাধিক সূত্র। 

জেএ 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *