ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে আটক তোফাজ্জল (৩০) নামে যে ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে তাকে এক দফা পেটানোর পর খেতে দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় গণপিটুনির পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
প্রথম দফা পেটানোর পর তোফাজ্জলকে হল ক্যান্টিনে খেতে দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ফেসবুকে তোফাজ্জলের খাওয়ার ছবি পোস্ট দিয়ে বলা হয়েছিল— হলের খাবারের স্বাদ তার ভালো লেগেছে।
গতকাল রাত ১২টার দিকে এসব ঘটনা ঘটে। এর আগে রাত ৮টার দিকে তাকে আটক করেন হলের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে রাত ২টার দিকে তার মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
তোফাজ্জলের বাড়ি বরিশালের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠাল তলি ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। জানা যায়, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ৮টা-৯টার দিকে ফজলুল হক হলে তোফাজ্জলকে চোর সন্দেহে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ‘চোরের গ্যাং’ শনাক্ত করতে তাকে জেরা করা হয়। তিনি কয়েকজনের ফোন নাম্বার মুখস্ত বলেন, যেগুলোর সত্যতা পাওয়া যায়। এতে তাকে ‘চোর’ হিসেবে উপস্থিত ছাত্রদের সন্দেহ বাড়ে। পরে তাকে একদফা পিটুনি দিয়ে ক্যান্টিনে খাওয়ানো হয়।
পরে দ্বিতীয় দফায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও পেটানো হয়। রাত ১০টার দিকে হলের হাউস টিউটররা ঘটনাস্থলে গেলে অবস্থার অবনতি ঘটায় তাকে রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায় কয়েকজন শিক্ষার্থী। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সার্বিক বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, কেউ চুরি করতে এলে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার কারও নেই। শিগগিরই মামলা করা হবে। আমরা সিসিটিভি ও অন্যান্য ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
কেএইচ/এনএফ