ইজিবাইকের জন্য মিলনকে হত্যা করে চার যুবক

ইজিবাইকের জন্য মিলনকে হত্যা করে চার যুবক

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আবু রায়হান মিলন (২২) নামে এক চালককে গলা কেটে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের ঘটনায় চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি, ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক ও চালকের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। 

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আবু রায়হান মিলন (২২) নামে এক চালককে গলা কেটে হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাইয়ের ঘটনায় চার যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি, ছিনতাই হওয়া ইজিবাইক ও চালকের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। 

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডমিন এন্ড ফিন্যান্স) ইবনে মিজান। 

এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে স্থানীয়দের খবরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঙ্গুরা গ্রামের একটি বাঁশঝাড় থেকে আবু রায়হান নামের এই ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার করে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ। পরে ১৪ সেপ্টেম্বর দিনগত রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদেরকে করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার খরিতা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে খিদেমুল ইসলাম (২৭), পলাষট্টি গ্রামের মৃত শুকুর আলীর ছেলে নাজমুল ইসলাম (১৯), একই গ্রামের বিশ্বনাথ মালির ছেলে চন্দন মালি (৩০) এবং রঘুনাথপুর গ্রামের মোখলেছুরের ছেলে মীর হোসেন (২৪)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানায়, গত ১১ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টার দিকে আবু রায়হান মিলন নামের এই ইজিবাইক চালক ভাড়া খাটার উদ্দেশে বাড়ি থেকে রওনা হয়। ওই দিন সন্ধ্যার দিকে ছিনতাই চক্রের সদস্যরা গোবিন্দগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য ইজিবাইক চালকের সঙ্গে আড়াই শত টাকায় ভাড়া ঠিক করে এবং রওনা দেয়। 

পথে ইজিবাইকটি কামদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চাঙ্গুরা আদিবাসি পাড়ায় বাঁশ ঝারে পৌঁছালে ছিনতাইকারীরা গামছা দিয়ে চালকের মুখ বাঁধে এবং রশি দিয়ে হাত-পা বাধার চেষ্টা করলে চালক ধস্তাধস্তি করেন। এতে ছিনতাইকারী আসামিরা তাদের কাছে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে গলার নিচে, বাম পাজরে, ডান কাঁধে ও পেটে আঘাত করে ইজিবাইক চালক আবু রায়হান মিলনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। পরে ছিনতাইকারীরা তার কাছে থাকা ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বের করে নিয়ে মরদেহ বাঁশঝাড়ে ফেলে যায়।

এ ঘটনার পরদিন ১২ সেপ্টেম্বর রাতে দক্ষিণ চাঙ্গুরা আদিবাসি পাড়ায় বাঁশঝার হতে অজ্ঞাত পরিচয়ের এই ব্যক্তির গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) মরদেহের ছবি প্রচারের পর তার পরিচয় সনাক্ত হয়। নিহতের নাম আবু রায়হান কবির মিলন এবং তিনি গাইবান্ধার পার্শ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ ভান্নাপাড়া গ্রামের মৃত সাহেব আলীর ছেলে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, এ ঘটনায় একইদিন দুপুরে নিহতের মা আনোয়ারা বেগম বাদি হয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানায় বেশ কয়েকজন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর পুলিশ তদন্তে প্রথমে খাদেমুল ও চন্দন মালিকে গ্রেপ্তার করে তাদের কাছ থেকে চালক রায়হানের মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিসহ নাজমুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে নাজমুলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সর্বশেষ হত্যায় জড়িত মীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদ করে বাগদা বাজারের শাওন নামের এক যুবকের বাড়ি থেকে ছিনতাই হওয়া ইজিবাইকটি উদ্ধার করে পুলিশ।

এছাড়াও পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান পুলিশ সুপার।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) উদয় কুমার সাহা, গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আ.ফ.ম আছাদুজ্জামান, ওসি তদন্ত তারেকুল ইসলাম টুটুল, বৈরাগীরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মতিউর রহমানসহ থানা পুলিশের সদস্যবৃন্দ।

রিপন আকন্দ/এমএসএ 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *