ইউক্রেনীয় বাহিনী থেকে ‘পালিয়েছে’ ১ লাখেরও বেশি সেনা, দাবি এমপির

ইউক্রেনীয় বাহিনী থেকে ‘পালিয়েছে’ ১ লাখেরও বেশি সেনা, দাবি এমপির

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গত প্রায় তিন বছরে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট থেকে পালিয়ে গেছেন ১ লাখেরও বেশি সংখ্যক সেনা। বুধবার ইউক্রেনীয় টেলিভিশন চ্যানেল নভিনির একটি লাইভ শোতে এই দাবি করেছেন দেশটির পার্লামেন্টের আইনপ্রণেতা আনা স্কোরোখোৎ।

রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গত প্রায় তিন বছরে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট থেকে পালিয়ে গেছেন ১ লাখেরও বেশি সংখ্যক সেনা। বুধবার ইউক্রেনীয় টেলিভিশন চ্যানেল নভিনির একটি লাইভ শোতে এই দাবি করেছেন দেশটির পার্লামেন্টের আইনপ্রণেতা আনা স্কোরোখোৎ।

যুদ্ধ শুরুর পর বিভিন্ন সময়ে এই সেনারা ব্যক্তিগত নানা কারণ দেখিয়ে ইউনিট প্রধানের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে আর ফিরে আসেননি বলে লাইভ শোতে জানিয়েছেন আনা। তিনি বলেন, “ছুটি কাটিয়ে কাজে যোগ না দেওয়া সেনা সদস্যদের সঠিক সংখ্যা আমি বলব না; কারণ এর সঙ্গে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং অন্যান্য অনেক স্পর্শকাতর ব্যাপার যুক্ত। তবে এই সংখ্যাটি ১ লাখের বেশি।”

ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা চলছে বলে লাইভ শো’তে বলেছেন আনা। এ নিয়ে ইউক্রেনের অনেক সেনা ও তাদের পরিবারের সদস্য তার কাছে অভিযোগ করেছেন বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

“আমার কাছে তারা (সেনা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা) প্রশ্ন করেছেন এবং আমি সেসবের উত্তর দিতে পারিনি। যেমন, ‘কেন আমি একজন সেনা হয়ে ট্যাংকের সামনে দাঁড়াব আর আমার সিনিয়র কমান্ডাররা ফ্রন্ট লাইন থেকে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থিত ঘাঁটিতে বসে আরাম করবেন?’ কিংবা, ‘কেন সেনা কর্মকর্তাদের মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ সত্যিকার অর্থে যুদ্ধের ময়দানে রয়েছেন এবং বাকিরা নিষ্ক্রিয় আছেন?”

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর অন্যতম আইনজীবী রোমান লিখাশেভও এমপি আনা স্কোরোখোতের এই দাবির সত্যতা স্বীকার করেছেন। রুশ সংবাদমাধ্যম আরটিকে এই আইনজীবী বলেন, “ইউক্রেনীয় বাহিনীতে নিশ্চিতভাবেই এক লাখেরও বেশি নথিভুক্ত সেনা দীর্ঘসময় ধরে অনুপস্থিত রয়েছে। সঠিক সংখ্যাটি একমাত্র সামরিক বাহিনীই বলতে পারবে।”

২০১৫ সালে সাক্ষরিত মিনস্ক চুক্তির শর্ত লঙ্ঘণ, ক্রিমিয়াকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী, যা এখনও চলছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ অভিযানের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধের শুরুর দিকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে সক্রিয় সদস্যের সংখ্যা ছিল প্রায় আড়াই লাখ। কিন্তু সেনা সদস্যদের হতাহত হওয়া এবং দায়িত্ব ছেড়ে পালানোর কারণে ব্যাপক জনবল সংকটে পড়েছে ইউক্রেনীয় বাহিনী। এ কারণে ২০২৩ সালে কয়েক বার বেসামরিক নাগরিকদের সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক করে নির্দেশ জারি করেছে কিয়েভ।

যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইউক্রেনীয় বাহিনীর কত সংখ্যক সেনা নিহত হয়েছেন, সে সম্পর্কিত স্পষ্ট সঠিক তথ্য কখনও প্রকাশ করেনি ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। জেলেনস্কি অবশ্য কয়েক মাস আগে বলেছিলেন, যুদ্ধে ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন, কিন্তু তার এই বক্তব্য দেশজুড়ে হাস্যরসের সৃষ্টি করায় এ ইস্যুতে আর মন্তব্য করেননি তিনি।

এদিকে প্রায় তিন বছরের যুদ্ধে দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, ঝাপোরিজ্জিয়া এবং খেরসন— এই চার প্রদেশের দখল করেছে রাশিয়া। মস্কোর প্রস্তাব— কিয়েভ যদি ক্রিমিয়াসহ এই চার প্রদেশকে রুশ ভূখণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে ইউক্রেনে সামরিক অভিয়ানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে। অন্যদিকে কিয়েভের বক্তব্য, রাশিয়া যদি অধিকৃত অঞ্চলগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নেয়, শুধু তাহলেই শান্তি সংলাপে বসবে ইউক্রেন।

 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *