আবেগের-প্রতিবাদের রঙিন গ্রাফিতি মাগুরা শহরজুড়ে 

আবেগের-প্রতিবাদের রঙিন গ্রাফিতি মাগুরা শহরজুড়ে 

সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সরকার বদলের সঙ্গে সঙ্গে মাগুরায় নানা গ্রাফিতিতে ভরে উঠেছে শহরের অলিগলিসহ প্রধান সড়কের পাশের দেওয়ালগুলো।

এসব গ্রাফিতিতে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের তুলে ধরা তাৎপর্যপূর্ণ নানা স্লোগানে দেশের বিভিন্ন অসঙ্গতি ফুটে উঠেছে। পাশাপাশি সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় গ্রাফিতিগুলো পথ চলতি মানুষকে দারুণভাবে উজ্জীবিত করে তুলছে।

মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট, শ্রীপুর সরকারি ডিগ্রি কলেজসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত মাগুরা ও শ্রীপুরের অন্তত ৮০ জন শিক্ষার্থী নিজস্ব অর্থায়নে রংতুলি নিয়ে গত ১ সপ্তাহ ধরে শহরের স্কুল কলেজ, উপজেলা পরিষদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেওয়ালে এসব গ্রাফিতি ফুটিয়ে তুলছে।

মাগুরা ও শ্রীপুর সদরের স্কুল, কলেজ ও  বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেওয়ালে নেই আর কোনো রাজনৈতিক দলের স্লোগান, কিংবা দলীয় নেতাদের পোস্টার।  সেখানে ঠাঁই করে নিয়েছে আবেগের প্রতিবাদের রঙিন গ্রাফিতি ও দেওয়াল লিখন। সেখানে জায়গা করে নিয়েছে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবিক এক দেশ গড়ার আওয়াজ। 

গ্রাফিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরুর দিকে গত ১৬ জুলাই রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গুলিবিদ্ধ ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ, ‘মুগ্ধ’র পানি লাগবে ভাই পানি ছবি স্থান পেয়েছে।

জুলাইতে শুরু হওয়া আন্দোলন আরও প্রলম্বিত হলে পরবর্তী মাসের ৫ তারিখে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিজয় অর্জিত হয়; যার পরিপ্রেক্ষিতে গ্রাফিতিতে ‘৩৬ জুলাই’ অঙ্কিত হয়েছে। পাশাপাশি ‘কী ভাবছেন, আয়নাঘরও নয়, হাওয়া ভবনও নয়’, ‘গাহি সাম্যের গান’, ‘স্বাধীন বাংলা ২.০’, ‘কিপ লার্নিং ব্রাইট, পলিটিক্স এসাইড’, ‘স্টপ ফলোয়িং অর্ডারস দ্যাট ডাজনট সার্ভ জাস্টিস’ ইত্যাদি স্লোগান শিক্ষার্থীদের আঁকা গ্রাফিতিতে স্থান করে নিয়েছে।

মাগুরা শহরের গ্রাফিতি অঙ্কনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী সৈয়দ আবরার আসিফ বলেন, দেশের মধ্যে নানা অসংগতি, বৈষম্য রয়েছে। এসব সংকট কাটিয়ে উঠতে পারলে আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ পাবো। সেই প্রত্যাশা নিয়েই আমরা রং তুলি দিয়ে তা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। এমনিভাবে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সবাই সোচ্চার হলে আমার সোনার বাংলা সত্যিকারের সোনার বাংলা হয়ে উঠবে।

শ্রীপুরে সদরে গ্রাফিতি অঙ্কনে অংশগ্রহণকারী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসান জোয়ার্দার বলেন, বৈষম্যহীন নতুন এক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এসব কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া পরবর্তী প্রজন্মের কাছে সমাজ বা রাষ্ট্রের কী চাওয়া এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত সব শহীদের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখতে এ উদ্যোগ।  

ফারুক আহম্মেদ নামে একজন বলেন, এমন কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো ক্লান্তি দেখা যায়নি। বৃষ্টি ও তপ্ত রোদ উপেক্ষা করে সারাদিন কাজ করে শহরের চিত্র বদলে দিয়েছেন তারা। গ্রাফিতি  দেখে সাধারণ মানুষজনও প্রশংসা করছেন। বদলে যাওয়া বাংলাদেশের জন্য এসব আমাদের জন্য ইতিবাচক ও আনন্দের। 

এনএফ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *