আন্দোলনে হত্যার ঘটনায় এবার আসামি ফেনীর সাবেক তিন এমপি

আন্দোলনে হত্যার ঘটনায় এবার আসামি ফেনীর সাবেক তিন এমপি

ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের নির্বিচারে গুলিতে নিহতের ঘটনায় জেলার সদ্য সাবেক তিন সংসদ সদস্যকে আসামি করে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে ফেনী মডেল থানায় দায়ের করা পৃথক ছয় হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ ১ হাজার ৯২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের নির্বিচারে গুলিতে নিহতের ঘটনায় জেলার সদ্য সাবেক তিন সংসদ সদস্যকে আসামি করে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে ফেনী মডেল থানায় দায়ের করা পৃথক ছয় হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ ১ হাজার ৯২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) বিকেলের দিকে মহিপালে নিহতদের মধ্যে মোবাইল টেকনেশিয়ান ওয়াকিল আহমেদ শাকিবের মা মাহফুজা আক্তার বাদী হয়ে ১৫১ জনের নামউল্লেখ ও আরও ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। নিহত শাকিব সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাশিমপুর এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

মামলার আসামিরা হলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ফেনী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, ফেনী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলি করার পরিকল্পনা ও নির্দেশনার অভিযোগে তাদের আসামি করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, এ ঘটনায় দায়েরকৃত পৃথক ছয়টি মামলায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মামলায় অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- ফেনী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শুসেন চন্দ্র শীল, ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজুমদার, ফেনী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ছনুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান করিম উল্লাহ বিকম প্রকাশ রেন্সু করিম, যুবলীগ নেতা জিয়া উদ্দিন বাবলু, আশরাফুল ইসলাম প্রকাশ কালা মোহন, দাগনভূঞা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সভাপতি দিদারুল কবির রতন, ফুলগাজী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুন মজুমদার, ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল, সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকন, পরশুরাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার সাবেক মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল প্রমুখ।

এর আগে এ ঘটনায় দায়েরকৃত পৃথক পাঁচটি মামলায় জেলার অন্তত ৪০ জন জনপ্রতিনিধিসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়। 

গত ৪ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছিলেন আন্দোলনকারীরা। একইসময়ে শহরের ট্রাংক রোডে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দুপুর দুইটার দিকে মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মহিপাল ফ্লাইওভারের দিকে এগোতে থাকলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এ সময় মুহুর্মুহু গুলি, ককটেল বিস্ফোরণে চারপাশ প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। বিকেল ৫টা পর্যন্ত থেমে থেমে সেখানে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে মহিপালের পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হওয়া ছাড়াও ইটপাটকেলের আঘাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।

তারেক চৌধুরী/পিএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *