আওয়ামী লীগ রচিত এই সংবিধান জনগণ মানে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল।
আওয়ামী লীগ রচিত এই সংবিধান জনগণ মানে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল।
তিনি বলেছেন, সাবেক সেনাপ্রধান মঈন উদ্দিন ও সাবেক তত্ত্বাবধাক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দিনকে ক্ষমা করার শর্তে আওয়ামী লীগকে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় বসানো হয়েছিল। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সংবিধান সংশোধন করে নিজেদের মতো সংবিধান রচনা করে। আওয়ামী লীগের রচিত এই সংবিধান জনগণ মানে না। যার ফলে ছাত্র-জনতার অর্জিত বিপ্লবের মাধ্যমে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকার জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা শতভাগ পূরণ করতে পারবে না, তবে জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনের যাত্রা এই সরকারকেই শুরু করতে হবে। মঈন উদ্দিন-ফখরুদ্দিনের বিচারও করতে হবে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের লগি-বৈঠার তাণ্ডবের প্রতিবাদে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর ও সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ছিল তৎকালীন চার দলীয় জোট সরকারের শেষ দিন। ওইদিন নয়া পল্টনে বিএনপি সমাবেশের ঘোষণা দেয়, অপরদিকে বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেটে জামায়াতে ইসলামী সমাবেশের ঘোষণা দেয়। ২৭ তারিখ রাতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী খুনি হাসিনা সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের লগি-বৈঠা দিয়ে প্রকাশ্যে পিটিয়ে মানুষ হত্যার নির্দেশ দেয়। পরবর্তীতে ২৮ অক্টোবর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা মানুষকে সাপের মতো পিটিয়ে হত্যা করে। শুধু হত্যা করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, তারা লাশের ওপর নৃত্য করেছে। ২৮ অক্টোবর পৃথিবীর ইতিহাসে এক ন্যাক্কারজনক ঘৃণিত দিন। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে কখনো চোরাগোপ্তা হামলা, কখনো গণহত্যা চালিয়েছে। শেখ হাসিনা জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করেছে, কিন্তু এদেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে দেশ ছাড়া করেছে।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে এমন ব্যক্তি নির্বাচিত করতে হবে যিনি আল্লাহর জমিনে আল্লাহর বিধান কায়েমে কাজ করবে, যিনি নিজেকে জনগণের শাসক নয় খাদেম মনে করবে। কোনো দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, দখলবাজ এই আসনের জনগণের নেতৃত্ব দিতে পারে না। তাই নেতা নির্বাচনে জনগণকে নেতার রাজনৈতিক ইতিহাস জানতে ও বুঝতে হবে। জামায়াতে ইসলামী নির্বাচিত হলে নিজেদেরকে জনগণের খাদেম হিসেবে নিয়োজিত রাখবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর পার্কে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর আমির হাফেজ গোলাম রাব্বানীর সভাপতিত্বে ও সদর আমির মাওলানা আব্দুল আলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সাবেক আমির অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, জেলা নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক লতিফুর রহমান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমির মাওলানা আবুজার গিফারী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু বকর, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মুখলেসুর রহমান, জেলা ওলামা বিভাগের দায়িত্বশীল মাওলানা ওমর ফারুক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি ওমর ফারুক, শ্রমিক কল্যণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট শফিক এনায়েত উল্লাহ, পৌর সেক্রেটারি মোক্তার হোসেন, সদর উপজেলা সেক্রেটারি অধ্যাপক গোলাম কবীর, সদর উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক দুরুল হুদা, পৌর শাখার সহকারী সেক্রেটারি তোহরুল ইসলাম সোহেল, সদর উপজেলা সহকারী সেক্রেটারি আবদুর রহমান প্রমুখ।
আরএআর