ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজকে আলাদাভাবে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা কলেজের শহীদ আ. ন. ম. নজীব উদ্দিন খান খুররম অডিটোরিয়ামে সাত কলেজের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি ও সংস্কার নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তারা এ প্রস্তাব করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকারি সাত কলেজ বড় ভূমিকা পালন করছে। এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে নীতিনির্ধারকেরা হ-য-ব-র-ল সিদ্ধান্ত নিলেও শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রচেষ্টা, দৃঢ়তায় স্বাতন্ত্র্য জিইয়ে রাখার চেষ্টা করছেন। বিভিন্ন সময়ে উচ্চশিক্ষার গুণগত মান আরও ভালো করার তাগিদে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হলেও সাত কলেজের জন্য তেমন গঠনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। অপরিকল্পিতভাবে অনেক স্বপ্ন এবং আশা দেখিয়ে ২০১৭ সালে ঢাবির অধিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এর কোন সুফল আসেনি। অধিভুক্তির পরও গঠনমূলক তেমন কোনে পরিবর্তন হয়নি।
তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদাসীনতায় সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। তারা শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, অধিভুক্ত এই কলেজগুলোর শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট, আবাসন সংকট, পরিবহন সংকট, ল্যাব সংকট সমাধানের দৃশ্যমান কোন উদ্যোগ নেয়নি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও শিক্ষার্থীদের শুধু পরীক্ষা আর সনদ দিয়ে আসছে। সেজন্য শিক্ষার্থীরা সাত কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি তুলেছেন।
এ সময় এই শিক্ষার্থী নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের একটি রূপরেখা তুলে ধরে বলেন, ‘সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ বা যেকোনো নামে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করা যেতে পারে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, সাত কলেজ প্রশাসন এবং শিক্ষাবিদদের নিয়ে একটি কমিশন গঠন করা যেতে পারে। কমিশন সাত কলেজকে কীভাবে ঢাবি থেকে বের করে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নিয়ে আসা হবে এবং কীভাবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা যাবে এটি নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তৈরি করে সুপারিশ প্রদান করবে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য সাত কলেজের যেকোনো একটি কলেজের প্রশাসনিক ভবনকে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন হিসেবে বিবেচনা করে কাজ পরিচালনা করা যেতে পারে। এছাড়াও সাত কলেজের বিপুল শিক্ষার কার্যক্রম পরিচালনায় রেজিস্ট্রার দপ্তর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরসহ সকল দপ্তরে পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে। স্বল্প সময়ের মধ্যে এসব কর্মকর্তা নিয়োগ নিশ্চিত করতে করবে সাত কলেজের সংস্কারে গঠিত কমিশন কাজ করতে পারে বলেও প্রস্তাবনায় তিনি উল্লেখ করেন।
এ সময় তিনি সাত কলেজের সাথে ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন বৈষম্যের কথাও তুলে ধরেন তিনি।
আরএইচটি/এসকেডি