৫ কোটি টাকার সড়কে কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধস

৫ কোটি টাকার সড়কে কাজ শেষ হওয়ার আগেই ধস

মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলায় নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সড়কে ধস দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিন দিন বাড়ছে ধস। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ওই সড়কে যাতায়াত। উপজেলার বেতকা সেতু থেকে টংগিবাড়ীর সোনারং পর্যন্ত সড়কে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলায় নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সড়কে ধস দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিন দিন বাড়ছে ধস। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ওই সড়কে যাতায়াত। উপজেলার বেতকা সেতু থেকে টংগিবাড়ীর সোনারং পর্যন্ত সড়কে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

জানা গেছে, সড়কটি দিয়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে সহজে কেরানীগঞ্জের মোল্লাবাজার হয়ে মুন্সীগঞ্জে যাতায়াত করা যায়। সড়কটি দিয়ে দিন দিন মানুষের যাতায়াত বেড়ে যাওয়ায় খানাখন্দ সৃষ্টি হয়। দুই বছর আগে সড়কটি সংস্কারে কাজ শুরু হয়। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনএএজেজে দীর্ঘদিন সড়ক খুঁড়ে ফেলে রাখায় যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পরে সড়কটি পুনরায় নির্মাণ শুরু হয়। তবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণে সড়কের কাজ শেষ না হতেই ধস দেখা দিয়েছে। সঠিকভাবে সড়কের দুই পাশে মাটি না ফেলানোয় এবং মাটি রক্ষার জন্য রাস্তার দুই পাশে সুরক্ষা ব্লক বা দেয়াল নির্মাণ না করায় রাস্তাটি ধসে পড়েছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তাটির বিভিন্ন স্থান ধসে পড়েছে। অনেক ধসে পড়া স্থানে ঘাস গজিয়ে রয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভেঙে পড়ছে সড়কটি। নির্মাণের শুরুতেই পচা পিকেট ইট ও নিম্নমানের বালুর মিশ্রণের অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। পরে এলজিইডির মুন্সীগঞ্জ ল্যাবটেকনিশিয়ান (এলটি) আব্দুর রবসহ একটি টিম সরেজমিনে মালামাল পরীক্ষা করার জন্য গিয়ে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার দেখে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অবগত করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ঠিকাদারের প্রতিনিধি কৌশিক ও সিজান মারপিট করে গুরুতর আহত করে। ঠিকাদারের বাড়ি গোপালগঞ্জে হওয়ায় ওই ঘটনায় মামলা পর্যন্ত দিতে দেয়নি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। তবে স্থানীয়দের চাপের মুখে উপজেলা প্রকৌশলী সেই সময় থানায় একটি জিডি করেন।

 

স্থানীয় গাড়িচালক রুবেল হোসেন বলেন, কয়দিন আগে রাস্তা করল। এখনই ভেঙে যাচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে রাস্তার ৩ ভাগের একভাগ ভেঙে গেছে। রাস্তার পাশে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে জিও ব্যাগের ওপর ব্লক বসানোর কথা ছিল। কিন্তু কিছু স্থানে ফেললেও সব স্থানে ফেলেনি। তারপর সিমেন্ট কম দিয়ে নিম্নমানের বালু ব্যবহার করায় এক ডলাতেই খসে পড়ছে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার পাশে ভেঙে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে খুঁটি পুঁতে লাল নিশান টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাস্তার মধ্যে ইট দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। অনেক স্থানে রাস্তার ওপর বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই রাস্তার কাজ করা হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে মালবাহী যানবাহন চলাচল করছে। 

এ বিষয়ে টংগিবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই সড়কটির কাজ এখনো চলমান রয়েছে। ঠিকাদার আমাদের কাজ এখনো হস্তান্তর করেনি। রাস্তার দুই পাশের অনেক স্থানে ধসে পড়েছে। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ পর্যবেক্ষণ করেছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। রাস্তাটি কীভাবে আবার সংস্কার করে হস্তান্তর করতে হবে সে ব্যাপারে ঠিকাদারকে দিক-নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার এখন কোনো কাজ করছে না। 

তিনি বলেন, ওই রাস্তাটির জন্য প্রায় ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া  হয়। ঠিকাদার আমাদের কাছে এখনো এক থেকে দেড় কোটি টাকা পায়। কাজ শেষ না করলে তাদের বিল দেওয়া হবে না। তাছাড় কাজ হ্যান্ডওভারের পরও এক বছর পর্যন্ত আমাদের কাছে ওই প্রজেক্টের ১০ ভাগ টাকা জমা থাকবে। সড়ক যদি হ্যান্ডওভারের পরে ক্ষতি হয়, তাহলে আমরা ওই টাকা থেকে সড়কটি সংস্কার করব।

ব.ম শামীম/আরএআর

 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *