১৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিতে ডুবেছে সাতক্ষীরা, দুর্ভোগে মানুষ

১৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিতে ডুবেছে সাতক্ষীরা, দুর্ভোগে মানুষ

থেমে থেমে হচ্ছে ভারী বৃষ্টি, সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া। তলিয়ে গেছে সাতক্ষীরা শহরের নিচু এলাকা। এ অবস্থায় বাড়ি থেকে কর্মক্ষেত্রের পথে বের হওয়া মানুষ পড়েছেন বেশি বিপাকে।

থেমে থেমে হচ্ছে ভারী বৃষ্টি, সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া। তলিয়ে গেছে সাতক্ষীরা শহরের নিচু এলাকা। এ অবস্থায় বাড়ি থেকে কর্মক্ষেত্রের পথে বের হওয়া মানুষ পড়েছেন বেশি বিপাকে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ১৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের ইটাগাছা, কামালনগর, মধুমোল্লারডাঙ্গী, বকচরা, রইচপুর, কুকরালী রাজারবাগ, বদ্দীপুর কলোনি, মধ্য কাটিয়া, বাকাল, সুলতানপুর, মুনজিতপুর, কলেজ মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় গোড়ালি থেকে হাঁটুসমান পানিতে রাস্তা তলিয়ে গেছে।

সাতক্ষীরা কাটিয়া এলাকার বাসিন্দা ইয়াসিন আরাফাত ঢাকা পোস্টকে জানান, বৃষ্টির কারণে নিচু সড়কগুলো ডুবে গেছে। নালাগুলো বন্ধ হওয়ায় পানি নিষ্কাশন হয়নি। বৃষ্টির পানি নালা উপচে সড়কে উঠে গেছে। ব্যক্তিগত কাজে বাইরে বের হওয়ার কথা থাকলেও সম্ভব হয়নি।

কাটিয়া মাঠপাড়া মাদরাসার শিক্ষক হাফিজুল ইসলাম বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে মানুষ দিন দিন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। মসজিদে নামাজ হচ্ছে না ঠিকমতো, মাদরাসায় আড়াই মাস ধরে ছাত্ররা আসা-যাওয়া করতে পারছে না। পড়াশোনা বন্ধ। পরীক্ষার পর থেকে আর ক্লাস হয়নি। একটাই কারণ, ঘেরের বেড়িবাঁধ দিয়ে আটকানো পানি। অন্য কোথাও এত ভয়ংকর পরিস্থিতি নেই।

পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাঠিয়া মাঠপাড়া এলাকার রুবিনা খাতুন বলেন, ছেলেপেলে নিয়ে এই পানিতে কষ্ট হচ্ছে। বাজার করতে পারছি না, এ ছাড়া চুলায়ও পানি। এই পানি প্রায় ছয়-সাত মাস থাকবেই।

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী অর্পণ বসু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা বারবারই মানববন্ধন করেছি পানির জন্য কিন্তু এর কোনো ফল পাচ্ছি না। কয়েক দিন আগে কিছু পানি কমেছিল তবে বৃষ্টির কারণে আবার  সব ডুবে গেছে। ড্রেন যখন করেছিল তখন বলা হয়েছিল পানি সব খালে গিয়ে পড়বে। কিন্তু শহরের পানি সব আমাদের এদিকে আসে। বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না, পানিতে ডুবে যাচ্ছি। রান্নাবান্নাও হচ্ছে না, চুলায় পানি।

তিনি আরও বলেন, খাওয়া-দাওয়ায় খুব সমস্যা হচ্ছে। চিড়া-মুড়ি খেয়ে থাকতে হচ্ছে। কেউ যদি অসুস্থ হয়ে যায় তাদের আনাও খুব ক্রিটিক্যাল ব্যাপার। কাঁধে করে আনতে হচ্ছে। যদি কোনো ডেলিভারির রোগী থাকে তাহলে আসতে আসতে ডেলিভারি হয়ে যাবে এমন অবস্থা। শুক্রবার মসজিদে নামাজ হয়েছে তারপর আর নামাজ পড়তে পারিনি। এখন ওই উপরে ছোট জায়গায় পড়তে হচ্ছে।

গদাই বিল এলাকার মোহাম্মদ আলী বলেন, দুর্ভোগের কথা কি আর বলব? পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। চুলকানি তো এখনই শুরু হয়ে গেছে। বাড়ি ভেতরে নোংরা পানি।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। শুক্রবার সকাল থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত সাতক্ষীরায় ১৩৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইব্রাহিম খলিল/এমজেইউ 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *