স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক নির্মাণ করছেন কুড়িগ্রাম পৌরবাসী

স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক নির্মাণ করছেন কুড়িগ্রাম পৌরবাসী

কুড়িগ্রাম পৌর শহরের ভেলাকোপার হানাগড় থেকে ক্যাতক্যাতার মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। সড়কটিতে দীর্ঘ ২০ বছরেও হয়নি সংস্কার। 

কুড়িগ্রাম পৌর শহরের ভেলাকোপার হানাগড় থেকে ক্যাতক্যাতার মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। সড়কটিতে দীর্ঘ ২০ বছরেও হয়নি সংস্কার। 

ফলে চরম দুর্ভোগ আছেন এলাকাবাসী। লিখিত ও মৌখিক আবেদন করলেও ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট দপ্তর। পরে জনদুর্ভোগ লাঘবে এলাকাবাসী চাঁদা তুলে সেচ্ছাশ্রমে সংস্কার করছে সড়কটি। সেই সঙ্গে পৌর কর দিয়েও পৌর সভার সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষোভ ঝাড়ছেন অনেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ড ভেলাকোপা মৌজার হানাগড়ের মাথা থেকে প্রায়েএক কিলোমিটার সড়কটি সংস্কার হয়নি ২০ বছরেও। 

এর ফলে ভেলাকোপা ওয়ার্ডের চারটি গ্রাম ও দুইটি ইউনিয়নের শত শত মানুষের যাতায়াত নিয়ে পড়েন চরম বিপাকে। তৎকালীন পৌর মেয়র ও সাবেক মেয়রকে অভিযোগ ও অনুরোধ করলেও তারা সড়কটি সংস্কারে কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে অভিযোগ তাদের।

সড়কটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় গ্রামবাসী নিজের টাকা দিয়ে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। সেটিও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় প্রতিদিনই কেউ না কেউ দুর্ঘটনার কবলে পড়ত। এমন দূর অবস্থা দেখেও পৌর কর্তৃপক্ষ নিরব থাকায় বাধ্য হয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক নির্মাণে এগিয়ে আসেন তারা। গত এক সপ্তাহ থেকে সড়কটি মেরামতে উঠে পড়ে লেগেছেন তারা।

স্থানীয় বাসিন্দা পারভেজ বলেন, নির্বাচন এলে জনপ্রতিনিধিরা হাজারো প্রতিশ্রুতি দেয়। নির্বাচিত হলে তারা জনগণের আর খোঁজ নেয় না। কুড়িগ্রাম পৌর শহরের চেয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে রাস্তাগুলো বর্তমানে অনেক ভালো। পৌর শহরে বসবাস করে সব টোল দিলেও পৌরসভার সুযোগ-সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। আপাতত আমরা সড়কটি সংস্কার করছি, সেটি কিন্তু স্থায়ী না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে অনুরোধ তারা যেন সড়কটি স্থায়ীভাবে চলাচলের একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। 

নুরনবী নামের আরও একজন বলেন, এই রাস্তাটি দিয়ে দুইটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী চলাচল করে। রাস্তার এমন অবস্থা একটা অটোরিকশাও চলে না। এছাড়া এখানকার হাজারও ছাত্র-ছাত্রী শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে অনেক কষ্ট নিয়ে যাতায়াত করে।

সড়কটি সংস্কারের কাজে অংশ নেওয়া মনজুরুল ইসলাম বলেন, আমরা নামমাত্র পৌর শহরে বসবাস করছি। রাজস্ব কর দিয়ে আসলেও আমরা এক নম্বর পৌরসভার সব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ কিংবা অ্যাম্বুল্যান্সের প্রয়োজন হলে শুধু মাত্র সড়কের কারণে পাই না। জনপ্রতিনিধিরা কথা দিয়ে কেউ কথা রাখে নাই। বাধ্য হয়ে আমরা গ্রামবাসী স্বেচ্ছা শ্রমে বাঁধটি নির্মাণ কাজ করছি। আশা করছি আর দু একদিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।

কুড়িগ্রাম পৌরসভার সাবেক কাউন্সিল জমসেদ আলী টুংকু মিয়া বলেন, সড়কটির বিষয়ে বারবার কাগজ পত্র নিয়ে ঢাকায় যোগাযোগ করা হয়েছে।  কিন্তু কোনো সমাধান না পাওয়ায় গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক সংস্কার করছে।

জুয়েল রানা/আরকে 

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *