আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কিছু নেতাকর্মীর কর্মকাণ্ডে বিএনপিকে চাঁদাবাজদের দল হিসেবে প্রশ্ন তুলছে সাধারণ মানুষ। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, মাছের ঘাট ও বালুমহাল দখল করে নিচ্ছেন তারা। এ ছাড়াও বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজবা উদ্দিন ফরহাদ।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কিছু নেতাকর্মীর কর্মকাণ্ডে বিএনপিকে চাঁদাবাজদের দল হিসেবে প্রশ্ন তুলছে সাধারণ মানুষ। সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা, মাছের ঘাট ও বালুমহাল দখল করে নিচ্ছেন তারা। এ ছাড়াও বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজবা উদ্দিন ফরহাদ।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বরিশাল নগরীর কালীবাড়ি সড়কে নিজ বাসভবনে মেহেন্দীগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় এসব অভিযোগ করেন তিনি।
মেজবা উদ্দিন ফরহাদ বলেন, উপজেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির নেতারা একটি গ্রুপ করে আর্থিক লাভবান হতে বিএনপিকে ব্যবহার করছেন। তারা দখল-চাঁদাবাজি করে বিএনপিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপচেষ্টা করছে। এইসব অপকর্মের নেতৃত্ব দিচ্ছে মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন। তিনি এবং তার সহযোগীদের ব্যাপারে কেন্দ্র অবহিত বলেও জানান এই বিএনপি নেতা।
আমার বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় নেতারা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এদের হাত থেকে বিএনপিকে মুক্ত করে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মুখে হাঁসি ফেরাবেন।
তার সভায় আগত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এখানে যারা এসেছেন এমন কোনো কাজ করবেন না, যাতে দলের ক্ষতি হয়। আমরা অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে অতীতেও সতর্ক ছিলাম, এখনো আছি এবং ভবিষ্যতেও সতর্ক থাকবো।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম লাবু। তিনি বলেন, মেহেন্দিগঞ্জের ত্যাগী ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের দূরে সরিয়ে বাণিজ্যিক কমিটি গড়ে দেওয়া হয়েছে। যে কমিটি চাঁদাবাজি ও দখলবাজিতে মানুষকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, মেহেন্দীগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি জিয়া উদ্দিন, বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সহসভাপতি দেলোয়ার হোসেন, লেঙ্গুটিয়া বিএনপি নেতা আলম ভূইয়া, জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হেলাল বাদশা, মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক নয়ন মাঝি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন, কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মুন্সি, জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ, বিএনপি নেতা কামাল বয়াতী, যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর হোসেন, ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক আজিজ প্রমুখ।
যদিও মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদের এমন বক্তব্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে জানিয়েছেন অভিযুক্ত উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন। তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পর্যন্ত হামলা করতে দিইনি। শান্তিশৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়—এমন কাজ, যা বিএনপিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, তা আমরা হতে দিইনি। হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, মাছ, বালুর ঘাট, খেয়া ও লঞ্চঘাট দখল করার কোনো ঘটনা এখানে ঘটেনি। বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ঘটলেও তার সঙ্গে মেজবা উদ্দিন ফরহাদের লোকই জড়িত বলে তিনি পালটা অভিযোগ তোলেন।
গিয়াস উদ্দিন বলেন, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজীব আহসান আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এটি মেজবা উদ্দিন ফরহাদ সহ্য করতে পারছেন না বিধায় বাস্তবতা বিবর্জিত তথ্য ছড়াচ্ছেন।
উল্লেখ্য, বরিশাল ৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজবা উদ্দিন ফরহাদ। এই আসনে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজীব আহসান সংসদ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএমকে