সেনেগালে ভাসমান নৌকায় মিলল ৩০ জনের পচা-গলা মরদেহ

সেনেগালে ভাসমান নৌকায় মিলল ৩০ জনের পচা-গলা মরদেহ

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সেনেগালে একটি নৌকা থেকে ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটির উপকূলীয় এলাকায় ভাসমান একটি নৌকায় মরদেহগুলো পচা-গলা অবস্থায় পাওয়া যায়।

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সেনেগালে একটি নৌকা থেকে ৩০ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটির উপকূলীয় এলাকায় ভাসমান একটি নৌকায় মরদেহগুলো পচা-গলা অবস্থায় পাওয়া যায়।

মূলত উন্নত জীবনের আশায় দেশটির উপকূলীয় এলাকা থেকে অভিবাসীদের বিপজ্জনকভাবে সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার ঘটনা সম্প্রতি বেড়েছে। সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনেগালের উপকূলে একটি নৌকায় অন্তত ৩০টি পচনশীল মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে সেনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক সামরিক বিবৃতি অনুসারে, রাজধানী ডাকার থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার (৪৫ মাইল) দূরে ভাসমান একটি নৌযানের বিষয়ে নৌবাহিনীকে জানানো হয়েছিল। তারা সোমবার সকালে কাঠের ক্যানো বা পিরোগটিকে বন্দরে নিয়ে আসে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মৃতদেহগুলোর অতিমাত্রায় পচনের কারণে সেগুলো উদ্ধার, পরিচয় শনাক্তকরণ এবং স্থানান্তর কার্যক্রম অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে করা হচ্ছে।”

নিহতদের মৃতদেহগুলো কতটা পচনশীল ছিল তা বিবেচনা করে ধারণা করা হচ্ছে, এসব অভিবাসীরা সম্ভবত আটলান্টিক মহাসাগরে অনেক দিন ধরে ভেসে ছিল। নৌযানটি কখন এবং কোন স্থান থেকে যাত্রা শুরু করেছিল এবং কতজন যাত্রী তাতে ছিল তা নির্ধারণের জন্য তদন্ত চলছে বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে।

এর আগে গত আগস্টে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের উপকূলে অন্তত ১৪টি পচনশীল মৃতদেহ পাওয়া যায়। মৃত ওই ব্যক্তিদের সেনেগালিজ অভিবাসী বলে মনে করা হয়েছিল।

এদিকে অভিবাসী-সম্পর্কিত মৃত্যুর ঊর্ধ্বগতির মধ্যে অবৈধ অভিবাসন মোকাবিলায় সেনেগালের সরকার গত আগস্টে ১০ বছরের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দেশটির উপকূলে নৌকায় করে যাত্রা করা শত শত অভিবাসীকে আটক করেছে কর্তৃপক্ষ।

প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, সেনেগাল হয়ে পশ্চিম আফ্রিকা ছেড়ে আসা অভিবাসীর সংখ্যা বেড়েছে। এসব অভিবাসীদের বেশিরভাগই যুবক। তারা সংঘাত, দারিদ্র্য এবং বেকারত্ব থেকে মুক্তির জন্য বিপজ্জনক সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে স্প্যানিশ দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছানোর চেষ্টা করে থাকে। চলতি বছর স্পেনের এই দ্বীপপুঞ্জে প্রায় ৩০ হাজার অভিবাসীর আগমন রেকর্ড করা হয়েছে।

ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে স্পেনই সবচেয়ে বেশি অভিবাসী গ্রহণ করে থাকে এবং দেশটিতে পৌঁছানোর জন্য অভিবাসীদের কাছে ভূমধ্যসাগরের পথটি সবচেয়ে জনপ্রিয়। তবে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক পশ্চিম আফ্রিকান অভিবাসী আটলান্টিক মহাসাগর হয়ে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে পৌঁছানোর পথও বেছে নিচ্ছে।

মূলত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিম আফ্রিকা উপকূল থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ অভিমুখে অবৈধ অভিবাসীদের বিপজ্জনক চলাচল অনেক বেড়ে গেছে। অভিবাসন প্রত্যাশীরা যেসব নৌকা বা নৌযানে সমুদ্র পাড়ি দেন, সেগুলোর ইঞ্জিন অনেক সময় ত্রুটিপূর্ণ থাকে।

এছাড়া ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করাও এসব নৌযানের ক্ষেত্রে খুব সাধারণ ব্যাপার। ফলে বিপজ্জনকভাবে সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিবাসন প্রত্যাশীরা মৃত্যুমুখে পতিত হন।

অবশ্য বিপজ্জনক সমুদ্র যাত্রার বিষয়ে অভিবাসীদের নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা চালানো হলেও তাতে খুব বেশি ফল মেলেনি।

টিএম

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *