ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজকে নিয়ে আলাদাভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে একটি কমিটি। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিটি উঠেছে নানা সংকটের কারণে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেসব সংকট কাটেনি। আর আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছাড়া এসব সংকট কাটানো সম্ভব নয়। সেজন্য আগামীকাল শনিবার আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা তুলে ধরে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজকে নিয়ে আলাদাভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে একটি কমিটি। তবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিটি উঠেছে নানা সংকটের কারণে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেসব সংকট কাটেনি। আর আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছাড়া এসব সংকট কাটানো সম্ভব নয়। সেজন্য আগামীকাল শনিবার আন্দোলনের পরবর্তী রূপরেখা তুলে ধরে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিমের ফোকাল পার্সন আব্দুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা গতকাল শিক্ষা উপদেষ্টা এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বসেছি। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে কোনো স্থানে আলাদা প্রশাসনিক ভবনে কার্যক্রম চালানোর প্রস্তাব দিয়েছেন৷ কিন্তু আমরা চাই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়৷ তাই ওই আলোচনায় কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি৷
এই শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আরও বলেন, আগামীকাল সকালে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা আলোচনায় বসে পরবর্তী কার্যক্রম ঠিক করবো৷ এরপর সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।
অপরদিকে, গতকাল (বৃহস্পতিবার) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রশাসনিক কাজকর্মের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই একটি জায়গার ঠিক করা হবে।
তিনি বলেন, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং সাত কলেজের প্রতিনিধিরা কথা বলেছেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটা জায়গার ঠিক করা হবে। যেখানে সাত কলেজের প্রশাসনিক কাজকর্ম করা যায়। তাদের বিষয়টা আলাদাভাবে দেখা হবে। তাদের আলাদা রেজিস্ট্রার থাকবে। পুরো বিষয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যান্ড কমিশনের সঙ্গে কথা বলে একটা সিদ্ধান্তে আসা হবে।
আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান ঢাবির
সরকারি সাত কলেজ সম্পর্কিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের বিষয়ে ঢাবি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য দিয়েছে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ বিভাগ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ বিষয়ে গতকাল (বৃহস্পতিবার) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠককে উদ্ধৃত করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘সরকারি সাত কলেজ দেখভালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই পুরোপুরি আলাদা একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকবে, যেখানে আলাদা রেজিস্ট্রারসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকবেন। তবে এ কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তই থাকবে।’
প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে উপদেষ্টা পরিষদের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবগত হয়েছে। এই প্রস্তাব বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের ইতোপূর্বে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। বিষয়টি জানার পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ও সরকারের বিভিন্ন উচ্চমহলে আলাপ করেছে।
এতে আরও বলা হয়, সরকারও বিষয়টির জনগুরুত্ব বিবেচনা করে আন্তরিকতার সঙ্গে সাড়া দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীসহ প্রধান অংশীজনদের নিয়ে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে (সম্ভাব্য তারিখ আগামী রোববার) এ বিষয়ে একটি জরুরি বৈঠক আয়োজনের ব্যাপারে সরকার সম্মত হয়েছে।
শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবি করে আসছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করে, সরকারি সাত কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ গুরুত্বপূর্ণ অংশীজনদের নিয়ে এ বিষয়ে আরও আলাপ-আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই এ ব্যাপারে একটি টেকসই ও শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব।
আরএইচটি/এমএসএ