শুধু তরকারিতে নয়, যে কচু খাওয়া যায় কাঁচাও!

শুধু তরকারিতে নয়, যে কচু খাওয়া যায় কাঁচাও!

কচুর নাম শুনলেই অনেকের হাত ও গাল চুলকাতে শুরু করে। অথচ সেই কচু দিব্বি কাঁচা চিবিয়ে খাচ্ছেন খুলনার কৃষক নিউটন মণ্ডল। এমনই এক আশ্চর্যজনক কচু চাষ কর সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।

কচুর নাম শুনলেই অনেকের হাত ও গাল চুলকাতে শুরু করে। অথচ সেই কচু দিব্বি কাঁচা চিবিয়ে খাচ্ছেন খুলনার কৃষক নিউটন মণ্ডল। এমনই এক আশ্চর্যজনক কচু চাষ কর সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।

নিজের ঘেরের পাড়ে উঁচু স্থানে থাই অগ্নিস্বর নামে এই কচু চাষ করছেন নিউটন। তার এলাকার সবার মাঝে কচুটি সাড়া ফেলেছে। তার দেখাদেখি অনেকেই শুরু করেছেন এই চাষ। রান্নায় এ কচুর স্বাদ অনেক বেশি।

কচু চাষ করে খ্যাতি পাওয়া নিউটন শুধু থাই অগ্নিস্বর কচু চাষ করছেন তাই নয়, এর চারা প্রস্তুত করে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আছে তার।

নিউটন জানান, দুই বছর আগে কৃষি বিভাগের সহায়তায় ডুমুরিয়া উপজেলার ঘোনা মাদারডাঙ্গা এলাকায় ঘের ও সবজির ক্ষেতের পাড়ে থাই অগ্নিস্বর কচু চাষ শুরু করেন নিউটন। এটি উচ্চমূল্যের কচু। এই কচু উঁচু ও শুষ্ক জায়গায় লাগাতে হয়। গাছের নিচে বা ছায়া জায়গাতেও লাগানো যায়। লাইন থেকে লাইন ২ হাত কচুটি লাগাতে হবে। কচু লাগানোর সময় জৈব সার দিতে হয়। থাই অগ্নিস্বর কচু এক বছরের নিচে হার্বেস্ট করা যায় না। দেড় বছর পর্যন্ত রাখলে ২০ কেজি পর্যন্ত কচুর মূল পাওয়া যায়। কচুটি ১২ মাসই লাগানো যায়। পানি নেই এমন জায়গাতে লাগাতে হয়। ঘেরে পাড় ও পরিত্যক্ত জায়গা, ঘরের আঙিনায় এই কচু লাগানো যায়।

কচুটি কাঁচা চিবিয়ে খাওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় স্থানীয় চাষি দশোরত মণ্ডল বলেন, কচু ধরলে বা কাটলে হাত চুলকায়। সেখানে থাই অগ্নিস্বর কচু কাঁচাই খাওয়া যায়। কোনো দিন কাঁচা কচু খাইনি। তবে এ কচু খাইতে খুব স্বাদ লাগলো।

কৃষক নিউটন মণ্ডল বলেন, এই কচুর গোড়া, বাকল ও পাতা খেলে গাল চুলকায় না। কাঁচা খেতে মিষ্টি আলু, শাক আলু, আনারস, কলার থোর, নারকেল ও খেজুরের মাথির মতো লাগে। এর ভেতরের কালার একেবারে ক্রিমের মতো হালকা হলুদ। তবে এটি কাঁচা খাওয়ার জন্য নয়। গরু, খাসি, মুরগি বা হাঁসের মাংসের তরকারিতে এই কচুর স্বাদ অতুলনীয়। শুধু মাংস নয়, মাছ কিংবা শুধু কচুটি রান্না করলেও খেতে দারুণ লাগে। এই কচুর এতোই স্বাদ যে একবার যে খাবেন তিনি আবারও খুঁজবেন।

তিনি বলেন, আমি শুরুতে ৬০০ চারা লাগাই। ২০টির মতো কচু বিক্রি করেছিলাম। বাকিগুলো কেটে কেটে চারা তৈরি করেছি।

নিউটন বলেন, এই কচুর চারার কদর অনেক। দেশে এই চারার চাহিদা মেটানোর মতো কোনো লোক নেই। অনেকেই আমার কাছ থেকে কচুটির চারা নিচ্ছে। প্রতি পিস চারা ৫০ টাকা করে বিক্রি করছি। এখন পর্যন্ত ৩ হাজার চারা বিক্রি করেছি। চারা যদি টিস্যূকালচার পদ্ধতিতে করতে পারতাম, তাহলে খরচ কম পড়তো। এই কচুর চারা তৈরি করা খুব কঠিন। চারা তৈরি করলে কচু বিক্রি করা যায় না। আমি এই কচুর গোড়া ২০ কেজি পর্যন্ত বড় করেছি। খেতে দারুণ সুস্বাদু। তাই চাহিদা ভালো। এ জন্য চারা তৈরি করছি। আমার কাছে ৫০০ গাছ এবং ৩ হাজার চারা আছে।

এই কচু চাষি বলেন, কচুটি চাষ করে অনেক লাভবান হওয়া সম্ভব। অনেকেই এখন এটি চাষ করছেন। নিউটন পানির কচু যেমন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে, এই থাই অগ্মিস্বর কচুও আমি ৬৪ জেলায় ছড়িয়ে দিতে চাই।

মোহাম্মদ মিলন/এফআরএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *