এক দফা দাবিতে সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলন পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সকাল ১০টার পর থেকেই ঘোষিত এ কর্মসূচির ব্যাপক প্রভাব পড়তে দেখা গেছে নওগাঁয়। শহরের কাজীর মোড়ে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর পাশাপাশি আন্দোলনে যোগ দিয়েছে অভিভাবকরাও।
এক দফা দাবিতে সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলন পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সকাল ১০টার পর থেকেই ঘোষিত এ কর্মসূচির ব্যাপক প্রভাব পড়তে দেখা গেছে নওগাঁয়। শহরের কাজীর মোড়ে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর পাশাপাশি আন্দোলনে যোগ দিয়েছে অভিভাবকরাও।
এ সময় আন্দোলনকারীরা সড়ক অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। ওই মুহূর্তে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সমস্বরে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার’, ‘দফা এক দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’, ‘এক দুই তিন চার, খুনি হাসিনা গদি ছাড়’, ‘আমার ভাই মরলো কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘এই মুহূর্তে দরকার, সেনাবাহিনীর সরকার’সহ বিভিন্ন সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায়।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, সরকারের কাছে যৌক্তিক দাবি উত্থাপন করেছিলাম। অথচ সেই দাবি আদায় করতে গিয়ে আমাদের শত শত ভাইবোনদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। কয়েক হাজার শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাই এখন আর কোনো আপস বা সংলাপের সুযোগ নেই।
তারা বলেন, গতকাল শনিবার নওগাঁয় আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। পুলিশ তাদের প্রতিহত করার বিপরীতে আমাদের ভাই-বোনদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ছুড়েছে। পুলিশ আমাদের ওপর গুলি চালালে এর চরম মূল্য দিতে হবে।
আন্দোলনে উপস্থিত শিক্ষার্থী ইফতেখার রহমান ও তানভীর শিহাব ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল শনিবার (৩ আগস্ট) নওগাঁয় আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। পুলিশ তাদেরকে প্রতিহত করার বিপরীতে আমাদের ভাই-বোনদের লক্ষ করে র্যাবার বুলেট এবং টিয়ারশেল ছুড়েছে। এই স্বৈরাচার সরকারের দালাল পুলিশ আমাদের আর একটি ভাই-বোনদের ওপর গুলি চালালে এর চরম মূল্য দিতে হবে। এই সরকারের পতন আমরা ঘটিয়েই ছাড়ব।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নওগাঁয় নেতৃত্ব দেওয়া ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আরমান হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল সারারাত ফেসবুকে গুজব ছড়িয়েও শিক্ষার্থীদের ঢল আটকাতে পারেনি আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা। আমাদের আন্দোলনে সাধারণ মানুষও অংশগ্রহণ করেছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) গাজিউর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি করলে তাদের বাধা দেওয়া হবে না। তবে, কিছু দুষ্কৃতকারী তাদের কর্মসূচির ভেতরে মিশে আছে এমন তথ্য আমরা পেয়েছি। জনগণের জানমাল রক্ষায় পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কেউ পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে ছাড় দেওয়া হবে না।
আরমান হোসেন রুমন/কেএ