শিক্ষা কমিশনে আস্তিক ও আগস্ট বিপ্লবের চেতনাধারীদের বসাতে হবে

শিক্ষা কমিশনে আস্তিক ও আগস্ট বিপ্লবের চেতনাধারীদের বসাতে হবে

বর্তমান শিক্ষা সংস্কার কমিশন ছেঁটে ফেলে আস্তিক ও আগস্ট বিপ্লবের চেতনাধারীদের বসাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

বর্তমান শিক্ষা সংস্কার কমিশন ছেঁটে ফেলে আস্তিক ও আগস্ট বিপ্লবের চেতনাধারীদের বসাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেছেন, ইতোমধ্যেই কিছু অসুবিধা দেখতে পাচ্ছি। শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছে কিন্তু এই দেশের ৯০ ভাগ মানুষ আস্তিক। তাহলে আস্তিকদের প্রতিনিধিত্ব নেই কেন সেখানে? যারা এই দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের চেতনাই বুঝতে পারে না তাদেরকে কেন বসতে দেওয়া হয়েছে? আমরা চাই তাদেরকে এখান থেকে সাফ করে দেওয়া হোক। তাদের জায়গায় তারা ফিরে যাক। এই জাতির ঘাড়ে তাদেরকে বসতে দেওয়া যাবে না। আস্তিক এবং আগস্ট বিপ্লবের চেতনা যারা ধারণ করে তাদেরকে এখানে বসাতে হবে।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের পরিবার ও আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুর রহমান এসব কথা বলেন।

জামায়াতের আমির বলেন, ১৫ বছরে আমাদের ওপর যে জুলুম করা হয়েছে আর কারও ওপর করেনি। আমাদের প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছে, আমাদের অফিসগুলো সিলগালা করা হয়েছে। আমাদের ভাই-বোনদের হত্যা করা হয়েছে। আমাদের শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এই যে জুলুম করা হয়েছে আমরা বলেছি তার প্রতিশোধ নেব না। প্রতিশোধ নিতে গেলে আমাদের ওপর যেভাবে জুলুম করা হয়েছে সেইভাবে জুলুম করতে হবে, আইন আমাদের হাতে তুলে নিতে হবে, কিন্তু আমরা আইন হাতে তুলে নেব না, এই জন্য ক্ষমা করেছি, কিন্তু গণহত্যার জন্য নয়। আয়নাঘরের গুমের জন্য বা গণধর্ষণের জন্য ক্ষমা করেনি। হাজার হাজার মানুষকে গুলি করে যে হত্যা করা হয়েছে তার বিচার অবশ্যই হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অনেক সাংবাদিক ভাইয়েরা জিজ্ঞাসা করেন যে, আপনার দলের শহীদের সংখ্যা কত? কিন্তু আমরা তাদের বলেছি আমরা সংখ্যা বলব না, কারণ শহীদরা কারো দলের হতে পারে না। তারা জাতির সম্পদ, তারা জাতির বীর। এই জন্য আমরা আমাদের দলের শহীদের সংখ্যা বলবে না, কারণ এই শহীদরা সমস্ত জাতির।

শফিকুর রহমান বলেন, ১১ জন জাতীয় নেতাকে ফাঁসির নামে হত্যা করা হয়েছে। দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। সাঈদীর মৃত্যুর রহস্য একদিন বের হয়ে আসবে। আমাদের হাজারো ভাইকে হত্যা করা হয়েছে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে দিয়েছে। জামায়াতের ওপর নিষ্ঠুর জুলুম করা হয়েছে। সকল পর্যায়ের মানুষের ওপর জুলুম করা হয়েছে। গণকবর দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, একজন ভিক্ষুককেও ক্যাডারদের চাঁদা দিতে হয়। তাহাজ্জুদ গোজারী নেত্রী নাকি ১০ টাকা মূল্যের চাল খাওয়াবেন। দ্রব্যমূল্যের আকাশচুম্বী দাম। বলা হয় দাম বেড়েছে আয়ও বেড়েছে। আয় বেড়েছে যারা সরকার দলীয় ছিল তাদের। 

জামায়াতের আমির বলেন, নির্বাচনের রোডম্যাপের আগে সংস্কারের রোডম্যাপ আমরা ঘোষণা করব। আমাদের ওপর বহু নির্যাতন করা হয়েছে তবুও গর্তে পালিয়ে যায়নি। আমরা জনগণের সঙ্গেই ছিলাম।

জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আবু তালেব মণ্ডলের সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইকবাল হুসাইনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জেলা জামায়াতের সাবেক আমির আব্দুর রহিম, নায়েবে আমির মাওলানা জহুরুল ইসলাম খান, শহীদ জাহিদুল ইসলামের বাবা দুলাল উদ্দিন মাস্টার, শহীদ মাহবুব হাসান নিলয়ের বাবা আবুল কালাম, সমন্বয়ক রাসেল মাহমুদ, বরকতুল্লাহ ফাহাদ প্রমুখ।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ মাঠে জামায়াতে ইসলামীর পাবনা জেলার ষান্মাসিক রুকন‌ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতের আমির। এরপর দুপুরে দারুল আমান ট্রাস্টে এতিমদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খান এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

রাকিব হাসনাত/আরএআর

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *