আগস্ট বিজয়োত্তর খুনিদের চিহ্নিত ও বিচার করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে দেশে মানবতাবিরোধী রাজনীতির অবসান ঘটনার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
আগস্ট বিজয়োত্তর খুনিদের চিহ্নিত ও বিচার করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির মাধ্যমে দেশে মানবতাবিরোধী রাজনীতির অবসান ঘটনার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
শুক্রবার (৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তরের মোহাম্মদপুর পশ্চিম থানা আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বীর শহীদ পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা কথা বলেন তিনি।
থানা আমির ডা. মু. শফিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও জোন পরিচালক জিয়াউল হাসান ও মোহাম্মদপুর দক্ষিণ থানা আমির সাখাওয়াত হোসেন।
উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমির মাহাদী হাসান, সেক্রেটারি মাসুদুজ্জামান, থানা কর্মপরিষদ সদস্য নূরে আলম সিদ্দিকী, রুহুল আমীন, আশরাফুল আলম ও আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ। এসময় সেলিম উদ্দিন চার শহীদ পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, আগস্ট বিপ্লবের শহীদরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। শাহাদাত আল্লাহর ফয়সালা ও মহাসম্মানের। আমাদের সন্তানরা জালিম শাসকের উৎখাত ও জুলুমের অবসানের জন্য হাসিমুখে শাহাদাত বরণ করেছিলেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কালামে হাকিমে শহীদদের মৃত বলতে নিষেধ করে তাদের জীবিত বলে আখ্যা দিয়ে এক অনন্য সাধারণ মর্যাদা দিয়েছেন। শহীদরা এতই মর্যাদাবান যে আখেরাতে তাদের ৭০ জনের পক্ষে সুপারিশ করার মহাসম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে।
আগস্ট বিপ্লবের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের বীর সন্তানরা বৈষম্যমুক্ত ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্যই অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছিলেন। স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছিল। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করে পাখির মতো নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। যা বিশ্ব ইতিহাসে নজিরবিহীন। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই এসব অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, শহীদরা আমাদের নতুন করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। তাদের জন্য তাদের পরিবারের সঙ্গে পুরো জাতিই গর্বিত। তাই রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। শহীদদের স্মরণে দেশে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, জনহিতকর ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আহতদের সুচিকিৎসাসহ তাদের পরিবারসহ শহীদ পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের জন্য সম্ভব সবকিছুই করা দরকার। প্রয়োজনে আহতদের দেশের বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। এ কাজে জামায়াত সবসময় তাদের পাশে থাকবে।
তিনি দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
মহানগর উত্তর আমির বলেন, মূলত বৈষম্যমুক্ত সমাজ ও সব ক্ষেত্রে জাস্টিস প্রতিষ্ঠার জন্যই ছাত্র-জনতা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। কিন্তু এই আন্দোলন মোটেই নির্বিঘ্নে হয়নি বরং শতসহস্র প্রাণের বিনিময়ে এ আন্দোলন বিজয় লাভ করেছে। তাই এ আন্দোলন দমাতে গিয়ে যারা মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হয়েছেন তাদের জন্য অবশ্যই শূন্য সহনশীলতা দেখাতে হবে। খুনিদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এজন্য দেশে মানবিক রাজনৈতিক দল দরকার। সে শূন্যতা পূরণের জন্য জামায়াত দীর্ঘ পরিসরে কাজ করে যাচ্ছে। মানুষের মুক্তি, কল্যাণ ও উন্নতির জন্য আমরা শপথবদ্ধ। তাই জামায়াতকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই দেশকে দুর্নীতি মুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব।
তিনি সেই স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান।
জেইউ/এসএসএইচ