এক হাতে রঙ, আর অন্য হাতে তুলি। মনের মাধুরী দিয়ে গ্রাফিতি আঁকছে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী বৃষ্টি আক্তার ও খাতুনে জান্নাত তিথী। তাদের মতো শতাধিক কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীর রঙ-তুলির আঁচড়ে বর্ণিল হয়ে উঠেছে রাজবাড়ী শহরের বিভিন্ন দেওয়াল।
একমাস আগেও যে দেওয়ালগুলো সিনেমা হল, কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রচারণার একমাত্র মাধ্যম ছিল, সে দেওয়ালগুলোই এখন পরিণত হয়েছে রঙিন ক্যানভাসে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতেই রাজবাড়ীতে কলেজগামী শিক্ষার্থীরা জেলা শহরের কলেজের বিভিন্ন দেওয়ালে ছবি আঁকা ও দেওয়াল লিখনে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দেওয়ালগুলোতে শিক্ষার্থীদের রঙ-তুলির ছোঁয়ায় ফুটে উঠছে বিদ্রোহী স্লোগানের পাশাপাশি সম্প্রীতির আহ্বান।
দেশের মানচিত্র, জাতীয় পতাকা, শিক্ষামূলক ও উপদেশমূলক বিভিন্ন বাণীও লেখা হচ্ছে। রাজবাড়ীর সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজ, টাউন মক্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজবাড়ী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, রাজবাড়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দেওয়ালে আঁকা হয়েছে গ্রাফিতি।
রাজবাড়ী সরকারী আদর্শ মহিলা কলেজের মানবিক বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী বৃষ্টি আক্তার বলেন, পূর্বের অভিজ্ঞতা না থাকায় ভয় নিয়েই আগ্রহের সাথে রঙ-তুলি হাতে তুলে নেই। সর্বশেষ যে কাজগুলো রঙ-তুলিতে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি, এটাই আমাদের পাওয়া।
একই ক্লাসের অপর ছাত্রী খাতুনে জান্নাত তিথী বলেন, যেহেতু আমাদের কথাটা হচ্ছে নতুন বাংলা। সেহেতু আমরা চাই, সব রকম ভেদাভেদ ভুলে সবাই মিলে একটা নতুন দেশ গড়ে তুলি।
একাদশ শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুল মাওয়া বলেন, প্রথম দিনের কাজটা নিজেদের উদ্যাগে করায় কলেজের শিক্ষকরা আমাদের কাজে খুশি হয়ে গ্রাফিতি আঁকতে সহযোগিতা করেছেন।
সড়কে চলাচলকৃত পথচারী রফিকুল ইসলাম ও সুজন বিষ্ণু বলেন, একসময় জেলা শহরের প্রায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেওয়ালগুলো বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে ছেয়ে নোংরা পরিবেশের সৃষ্টি করেছিল। শিক্ষার্থীদের এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে সেই দেওয়ালগুলো নতুন রুপে ফিরে এসেছে। আমাদের অভিভাবকদের উচিত-শিক্ষার্থীদের এ সকল কাজে সহযোগিতা করা। শুধু দেওয়ালে গ্রাফিতি নয়, এ শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণেও দায়িত্ব পালন করে দেশের সকল স্তরে প্রশংসিত হয়েছেন।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এনএফ