শরীরে আগুন দেন স্বামী-শাশুড়ি, দেড় মাস পর গৃহবধূর মৃত্যু

শরীরে আগুন দেন স্বামী-শাশুড়ি, দেড় মাস পর গৃহবধূর মৃত্যু

মুন্সীগঞ্জে স্বামী-শাশুড়ির দেওয়া আগুনে ১ মাস ১৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে হেরে গেছেন গৃহবধূ স্বর্ণা রাণী (২৪)। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, স্বামী ও শাশুড়ির দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে এতদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন নিহত ওই নারী।

মুন্সীগঞ্জে স্বামী-শাশুড়ির দেওয়া আগুনে ১ মাস ১৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে হেরে গেছেন গৃহবধূ স্বর্ণা রাণী (২৪)। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ, স্বামী ও শাশুড়ির দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে এতদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন নিহত ওই নারী।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তার মরদেহ নিজ এলাকার পুরা শ্মশানে দাহ করা হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে, সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ওই নারীর মৃত্যু হয়।

নিহত স্বর্ণা টঙ্গিবাড়ী উপজেলার নসংঙ্কর গ্রামের কৃষ্ণ সরকারের মেয়ে।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর উত্তর কামারখাড়া গ্রামের মিজি বাড়ির দিলিপ রায়ের ছেলে দীপ্ত রায় পরিবারের অমতে নিহত স্বর্ণা রাণীকে জোরপূর্বক বিয়ে করেন। দীপ্ত রায় এলাকায় ভবঘুরে ধরনের ও মাদকাসক্ত ছিলেন। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই দীপ্ত ও তার মা স্বর্ণাকে তার বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিতেন ও মারধর করতেন। স্বর্ণা বিষয়টি তার পরিবার ও আত্মীয় স্বজনদের একাধিকবার জানিয়েছিলেন। পরে এ বছরের ৩০ জুলাই সকালে আবারও যৌতুকের দাবিতে স্বর্ণাকে মারধর করে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন তার স্বামী ও শাশুড়ি। এতে গুরুতর দগ্ধ হলে স্বর্ণার স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেন। পরে চিকিৎসক তাকে শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে রেফার করেন। সেখানে ১ মাস ১৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে সোমবার মৃত্যুর কোলে ঢলে পরেন তিনি।

নিহত স্বর্ণার বাবা কৃষ্ণ সরকার বলেন, আমার মেয়েরে ওরা অনেক মারধর করতো। আগুন দেওয়ার ৫ দিন আগে ওরা ৪-৫জন মিলে আমার মেয়েরে খুব মারছে। পরে ৩০ জুলাই ওকে মারধর করে রান্না ঘরে নিয়ে ওর স্বামী আর শাশুড়ি মিলে স্বর্ণার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আমার মেয়ে মৃত্যুর আগে তার বোনের কাছে সব বলে গেছে। আমি ওর স্বামী শাশুড়ির বিচার চাই। আমি আমার মেয়ের সংস্কার কাজে ব্যস্ত আছি। সংস্কার কাজ শেষে আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করবো।

টঙ্গিবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, আমি মৌখিকভাবে বিষয়টি শুনেছি। নিহত ওই নারীর পরিবারের অভিযোগ, তার শাশুড়ির দেওয়া আগুনে তিনি দগ্ধ হয়েছেন। ওই নারী মারা যাওয়ার পরে আমাকে তারা ঢাকা থেকে ফোন করেছিলেন। আমি বলেছি, অভিযোগ থাকলে মরদেহ ময়নাতদন্ত করাতে হবে। পরে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ব.ম শামীম/এফআরএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *