লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে নিহত ৫ ইসরায়েলি সেনা

লেবাননে হিজবুল্লাহর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে নিহত ৫ ইসরায়েলি সেনা

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযানে ৫ ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও এক সেনা কর্মকর্তা ও তিন সেনা।

লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান অভিযানে ৫ ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা ও সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও এক সেনা কর্মকর্তা ও তিন সেনা।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছে এ তথ্য। নিহত সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যদের নাম-পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। এরা হলেন মেজর ওফেক বাচার (২৪), ক্যাপ্টেন ইলাদ সিমান তোভ (২৩), স্টাফ সার্জেন্ট এলায়াশিভ এইতান ওইদার (২২), স্টাফ সার্জেন্ট ইয়াকোভ হিলেল (২১) এবং স্টাফ সার্জেন্ট ইয়েহুদা দিরোর ইয়াহালম (২১)।

নিহতদের মধ্যে মেজর ওফেক বাচার ইসরায়েলের নেস জিওনা, ক্যাপ্টেন ইলাদ সিমান তোভ তিজোফিম স্টাফ সাজেন্ট এলায়াশিভ এইতান ওইদার জেরুজালেম, স্টাফ সার্জেন্ট ইয়াকোভ হিলেল জেরুজালেম এবং স্টাফ সার্জেন্ট ইয়েহুদা দিরোর ইয়াহালম হেবরনের বাসিন্দা ছিলেন। নিহত এবং আহতদের সবাই ইসরায়েলের স্থলবাহিনীর গোলান ব্রিগেডের সদস্য ছিলেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে আইডিএফ।

পৃথক এক বার্তায় আইডিএফের মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হ্যাগারি জানিয়েছেন, দক্ষিণ লেবাননের একটি গ্রামে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের সঙ্গে মুখোমুখী যুদ্ধে নিহত হয়েছেন এই ৫ ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যরা। এ অভিযানে বেশ কয়েক জন হিজবুল্লাহ যোদ্ধাকে বন্দি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ইরানের সমর্থন ও মদতপুষ্ট হিজবুল্লাহ বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী। লেবাননভিত্তিক এই গোষ্ঠীটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৫ সালে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এই গোষ্ঠীটি ইসরায়েল রাষ্ট্রকে ধ্বংসের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় সীমান্ত ঘেঁষে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চল অবস্থিত। এই অঞ্চলটি হিজবুল্লাহর প্রধান ঘাঁটি এবং গোষ্ঠীটির অধিকাংশ সামরিক স্থাপনার অবস্থান এখানে। গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু করে হিজবুল্লাহ। পাল্টা জবাব দেওয়া শুরু করে ইসরায়েলও। গত এক বছরে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে লেবাননে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুর সংখ্যা ৫ শতাধিক। তবে আইডিএফের দাবি, এই নিহতদের মধ্যে ৯৪০ জন হিজবুল্লাহ কমান্ডার ও যোদ্ধা রয়েছে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। প্রায় ১০ দিনের সেই অভিযানে নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা ও সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহসহ বেশ কয়েক জন শীর্ষ কমান্ডার। এতে গোষ্ঠীটির চেইন অব কমান্ডের সর্বোচ্চ স্তর প্রায় ভেঙে পড়েছে।

বিমান অভিযান পর্বের পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে দক্ষিণ লেবাননে অভিযান শুরু করেছে আইডিএফের স্থল বাহিনী। এর আগে এক বিজ্ঞপ্তিতে আইডিএফ বলেছিল, ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ লেবাননের গ্রামগুলোতে সীমিত ও স্থানীয় পর্যায়ে অভিযান চালানো হবে। তবে কতদিন এ অভিযান চলবে, সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য বা ইঙ্গিত এখনও দেয়নি আইডিএফ।

ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে ইতোমধ্যে লেবাননে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

সূত্র : টাইমস অব ইসরায়েল

এসএমডব্লিউ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *