‘রাজাকার’ স্লোগানে শিক্ষার্থীরা মার খেয়েছে, মানতে হীনমন্যতা কেন?

‘রাজাকার’ স্লোগানে শিক্ষার্থীরা মার খেয়েছে, মানতে হীনমন্যতা কেন?

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক এ বি জুবায়ের বলেছেন, যে রাজাকার স্লোগানের ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের মার খেয়েছিল, সারা দেশের সব ছাত্র-জনতা গর্জে উঠেছিল, হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচার হাসিনার পতন হয়েছিল, সে স্লোগানকে মেনে নিতে এত হীনমন্যতা কিসের? তারাই সত্যকে স্বীকার করতে চায় না যাদের মনে মিথ্যা রয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক এ বি জুবায়ের বলেছেন, যে রাজাকার স্লোগানের ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ১৫ জুলাই ছাত্রলীগের মার খেয়েছিল, সারা দেশের সব ছাত্র-জনতা গর্জে উঠেছিল, হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচার হাসিনার পতন হয়েছিল, সে স্লোগানকে মেনে নিতে এত হীনমন্যতা কিসের? তারাই সত্যকে স্বীকার করতে চায় না যাদের মনে মিথ্যা রয়েছে।

রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন। এর আগে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে বিশাল মিছিল নিয়ে নীলক্ষেত-ভিসি চত্বর হয়ে রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন। 

এসময় শিক্ষার্থীরা, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার স্বৈরাচার’, ‘বিকৃতি চলবে না, সাক্ষী আছে জনতা’, ‘ইনকিলাব, জিন্দাবাদ’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। 

এ বি জোবায়ের বলেন, আমার স্পষ্ট মনে আছে- খুনি হাসিনা আমাদের রাজাকারদের নাতিপুতি বলার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান নিয়ে বানের জলের মতো, মেয়েরা পঙ্গপালের মতো হল থেকে বের হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, যে স্লোগানে হাসিনার পতন হয়েছে সে স্লোগানকে বিকৃত করা হচ্ছে। এই স্লোগানকে বদলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই স্লোগানকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের মার খেয়েছে, সারা দেশের মানুষ জেগে উঠেছে, স্বৈরাচারী হাসিনার পতন হয়েছে, সে স্লোগান মেনে নিতে এত হীনমন্যতার কেন?

তিনি বলেন, আমরা ছাত্র-জনতা তাদের ইতিহাস পরিবর্তন করার কোনো সুযোগ দেবো না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, তারা ২০২৪ সালের আন্দোলনের চেতনার বিরুদ্ধে, ২৪ এর গণ অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে। আপনাদের বলতে চাই, অপরাধ স্বীকার করুন, সত্যকে মেনে নিন। আমরা সেই ছাত্র জনতা, যার ভয়ে হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তাই আমাদের সাথে খেলতে আসবেন না। 

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র ইউনিয়ন সহ-সমন্বয়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মোসাদ্দেক ইবনে আলী বলেন, অভ্যুত্থানের দুই মাস যেতে না যেতেই ইতিহাস বিকৃতির অপচেষ্টা শুরু করছে একদল অপতৎপরতাকারী। তারা সহস্রাধিক শহীদের রক্তের ওপর প্রতিষ্ঠিত গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি চিহ্ন মুছে দিতে চায়।  মুগ্ধ-আবু সাঈদের সহযোদ্ধারা এই চক্রান্ত বাস্তবায়ন হতে দেবে না।

তিনি বলেন, খুনি হাসিনা ও তার পালিত সন্তানরা গত ১৫-১৬ বছর ‘রাজাকার’ ট্যাগের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে গণহত্যা ও গুম-নির্যাতনের স্টিমরোলার চালানোর বৈধতার লাইসেন্স দিয়েছিল। শেখ হাসিনা ১৪ জুলাই শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ গালি দেওয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছেন। তার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান তুলেছে, সেই স্লোগানের মধ্যে খুনি হাসিনার চক্রান্তই ব্যর্থ হয়নি বরং হাসিনা সমূলে উৎপাটিত হয়ে ইতিহাসের ঘৃণার আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে।

বক্তারা বলেন, ২৪ এর বিপ্লব কোনো সমন্বয়কের নয়, মাস্টারমাইন্ডের নয়, জামায়াত-শিবির, বিএনপি কিংবা ছাত্রদলের নয়। এই বিপ্লব ছাত্র-জনতার, যাত্রাবাড়ীর, রামপুরার, উত্তরার, সারা বাংলাদেশের। আমরা কোনো দলের হাতে এই বিপ্লবকে ছেড়ে দেবো না। আপনারা যদি ২৪ এর বিপ্লবকে নিজেদের বলে মনে করতে থাকেন, মনে রাখবেন আপনাদের অবস্থা হাসিনার থেকে ভয়ংকর হবে। আমরা ছাত্র সমাজ থাকতে এই ইতিহাসকে কোনোভাবেই বিকৃত হতে দেবো না।

প্রসঙ্গত, ১৪ জুলাই এক সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধাদের নাতিপুতিরা কোটা পাবে না? তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা পাবে? 

শেখ হাসিনার এই মন্তব্যের প্রতিবাদে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে তা সারা দেশে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে।

সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা ১৪ জুলাইয়ের মূল স্লোগান ‘কে রাজাকার কে রাজাকার, তুই রাজাকার তুই রাজাকার’ বলে ফেসবুকে প্রচার করতে থাকেন। যার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

কেএইচ/পিএইচ

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *