রং-তুলিতে পিরোজপুরের জরাজীর্ণ দেয়াল সাজাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

রং-তুলিতে পিরোজপুরের জরাজীর্ণ দেয়াল সাজাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

রং-তুলির আঁচড়ে পিরোজপুরের জরাজীর্ণ দেয়াল সাজাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

রং-তুলির আঁচড়ে পিরোজপুরের জরাজীর্ণ দেয়াল সাজাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এতে ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন তারা। ‘বিকল্প কে? আমি তুমি আমরা’, ‘মহাকালের সাক্ষী হলো বাংলাদেশর নাম, যুদ্ধ করে জীবন দিয়ে বিজয় নিয়ে এলাম’, ‘পানি লাগবে পানি?’, ‘আমার রঙে স্বাধীনতা’—এমন নানান প্রতিবাদী উক্তি শোভা পাচ্ছে শহরের দেয়ালগুলোতে।

শনিবার (১৭ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের শহীদ মিনার চত্বর, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের পেছনের অংশ, পিরোজপুর সরকারি মহিলা কলেজ, পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ, পিরোজপুর সরকারি বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে দেয়ালে অঙ্কন করছেন শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কাজ করছেন ভলানটিয়ার ফর বাংলাদেশ পিরোজপুর জেলা শাখার সদস্যরা। শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালে চোখ আটকে যাচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে এক হাতে রঙের কৌটা, অন্যহাতে তুলি নিয়ে জরাজীর্ণ দেয়ালগুলোতে রং করছেন শিক্ষার্থীরা। অপরিচ্ছন্ন প্রতিটি দেয়াল সাদা, কালো, লাল, নীল, হলুদ, সবুজসহ নানা রঙে বিভিন্ন দৃশ্যে তুলির আঁচড়ে রাঙাচ্ছেন তারা। তাদের কারও হাতে ছিল রং-তুলি, কেউ আবার করছেন দেওয়াল পরিষ্কার। আবার কেউ কেউ শিক্ষার্থীদের জন্য করছেন খাবারের ব্যবস্থা। সবার চোখে-মুখেই ছিল বিজয়ের হাসি।

শহীদ মিনার সড়কে কম্পিউটারের ব্যবসা করেন কাওসার আলী। তিনি বলেন, ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের মনের মতো করে ছবি আঁকছেন। তবে তাদের লেখার মধ্যে আছে প্রতিবাদের ভাষা, ত্যাগের ভাষা। তাদের লেখা দেখে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। যারা রাস্তায় চলাচল করছে তারা সবাই এক নজর হলেও দেখে যাচ্ছে তাদের কাজ।

শিক্ষার্থী সাজেদা আক্তার রিয়া বলেন, শহরের গুরুত্বপূর্ণ যেসব দেয়ালগুলো এতোদিন বিভিন্ন পোস্টারে নোংরা হয়েছিলো তা আমরা পরিষ্কার করে নতুন রূপ দিচ্ছি। দেয়ালে রং করে জনসচেতনতা বাড়াতে নানা স্লোগান লিখছি।

শিক্ষার্থী ও ভলানটিয়ার ফর বাংলাদেশের সদস্য জান্নাত মিম বলেন, সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে ভলানটিয়ার ফর বাংলাদেশ পিরোজপুর জেলা শাখা কাজ করছে। আমরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টের অনুজ্জ্বল ও অসুন্দর দেয়ালে রং করছি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও বিশিষ্টদের অর্থ সহায়তায় এই দেয়াল চিত্র কর্মসূচি আমাদের। আমরা ইতোমধ্যে শহীদ মিনার, মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটে পেছনের অংশ, পিরোজপুর সরকারি মহিলা কলেজ প্রাচীর, পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাচীরগুলো রং করেছি। আমরা সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সহায়তা কামনা করছি।

আদিল শাদমান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা সবাই মিলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছি। সাধারণ মানুষও যুক্ত হয়েছিলেন। শহরের দেয়ালগুলোতে তাই আমরা তুলে ধরেছি সেই আন্দোলনের নানা স্মৃতি। যাতে পথচারী শিশু-কিশোর থেকে বয়স্ক সবাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি ভুলে না যান। আমরা যে বিজয় অর্জন করেছি, এই বিজয়কে কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে দেব না।

শাফিউল মিল্লাত/এএমকে

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *