পশ্চিমবঙ্গের আর জি কর হাসপাতালে নিহত ইন্টার্ন নারী চিকিৎসকের দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, মিলেছে যৌন সহিংতার প্রমাণও। সোমবার ওই চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
পশ্চিমবঙ্গের আর জি কর হাসপাতালে নিহত ইন্টার্ন নারী চিকিৎসকের দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, মিলেছে যৌন সহিংতার প্রমাণও। সোমবার ওই চিকিৎসকের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ‘তার দেহে একাধিক ক্ষতচিহ্ন ছিল। মাথা, গাল, ঠোঁট, নাক, ডান চোয়াল, চিবুক, গলা, বাঁ হাত, বাঁ কাঁধ, বাঁ হাঁটু, গোড়ালি এবং যৌনাঙ্গে ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। ফুসফুসে রক্ত জমাট বেঁধেছিল। দেহের আরও কিছু অংশেও জমাট বেঁধেছিল রক্ত।’
ওই নারী চিকিৎসকের যৌনাঙ্গে যে জোরপূর্বক কিছু প্রবেশ করানো হয়েছিল (পেনিট্রেশন/ইনসারশন) এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছিল— তাও উল্লেখ করা হয়েছে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে।
এদিকে একাধিক মহল থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছিল যে নিহতের দেহে ১৫০ গ্রাম বীর্য (সিমেন) মিলেছে। কলকাতা হাই কোর্টে ওই নারী চিকিৎসকের পরিবার যে পিটিশন দায়ের করেছে, সেখানেও এই বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে।
তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ‘সিমেন’ সংক্রান্ত কোনও উল্লেখ নেই। রিপোর্টে লেখা হয়েছে, নিহতের ‘এন্ডোসার্ভিক্যাল ক্যানাল’ থেকে ‘সাদা ঘন চটচটে তরল’ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে সেই তরল কী, তার উল্লেখ নেই রিপোর্টে।
কলকাতার এক ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের এ প্রসঙ্গে বলেন, “যে সাদা চটচটে তরলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা কী বস্তু তা ফরেন্সিক রিপোর্ট থেকে জানা যাবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এমন কিছু লেখা যায় না। কারণ, সেটা পরীক্ষাসাপেক্ষ বিষয়।”
এছাড়া বিভিন্ন মহল থেকে নিহতের শরীরের একাধিক হাড় ভাঙার যে সব কথা উঠে আসছিল, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তেমন হাড় ভাঙার কোনও উল্লেখ নেই। রিপোর্টে লেখা হয়েছে, ‘‘শ্বাসরোধ করার কারণে মৃত্যু। মৃত্যুর ধরন খুন। যৌনাঙ্গে জোরপূর্বক কিছু প্রবেশ করানোর মেডিক্যাল প্রমাণও রয়েছে। যৌন হেনস্থার সম্ভাবনা।’’
গত ৯ আগস্ট ভোরের দিকে কলকাতার শ্যামবাজার এলাকায় অবস্থিত আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের বিশ্রামকক্ষ থেকে এক নারী চিকিৎসকের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার হয়। পরে ময়নাতদন্তে জানা যায়, ওই চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল।
তবে দেহ উদ্ধারের পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছিল যে ওই চিকিৎসক আত্মহত্যা করেছেন। কর্তৃপক্ষের এই বক্তব্যের পর প্রথমে ফুঁসে ওঠে কলকাতা, পরে গর্জে ওঠে পুরো পশ্চিমবঙ্গ।
ইতোমধ্যে এ ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ, যিনি পেশায় ছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার। হাই কোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। ধৃতকে হেফাজতে নিয়েছে তাঁরা।
এসএমডব্লিউ