২৫০ শয্যা মাদারীপুর জেলা হাসপাতালে গত ছয় মাস ধরে নেই কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আহতদের ভ্যাকসিন। বাহিরের ফার্মেসি থেকে কিনে এনে চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে হাসপাতালে আসা আহত রোগীদের। এতে একদিকে ভোগান্তি এবং অপরদিকে অর্থের অভাবে চিকিৎসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন গরিব রোগীরা। জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন চেয়ে কয়েকবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জানানো হলেও কোনো ফলাফল মেলেনি বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
২৫০ শয্যা মাদারীপুর জেলা হাসপাতালে গত ছয় মাস ধরে নেই কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আহতদের ভ্যাকসিন। বাহিরের ফার্মেসি থেকে কিনে এনে চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে হাসপাতালে আসা আহত রোগীদের। এতে একদিকে ভোগান্তি এবং অপরদিকে অর্থের অভাবে চিকিৎসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন গরিব রোগীরা। জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন চেয়ে কয়েকবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জানানো হলেও কোনো ফলাফল মেলেনি বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৫ উপজেলা মাদারীপুর সদর, রাজৈর, কালকিনি, শিবচর ও ডাসার থেকে প্রতিদিন কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আহত শত শত রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন মাদারীপুর জেলা হাসপাতালে। তবে প্রায় ছয় মাস যাবত সরকারিভাবে ভ্যাকসিন সাপ্লাই দিচ্ছে না স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিডিসি বিভাগ। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে বিপাকে পড়ছেন তারা। তবুও প্রিয়জনকে সুস্থ করে তুলতে বাহিরের ফার্মেসিগুলোতে ছুটে যাচ্ছেন। দ্রুত এর সমাধান চান ভুক্তভোগীরা। কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু।
ভাতিজিকে নিয়ে হাসপাতালে আসা ভুক্তভোগী তামান্না আক্তার বলেন, আমার ভাইয়ের মেয়েকে বিড়ালে কামড় দিয়েছে। তাই মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভ্যাকসিন দিতে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু গিয়ে শুনি ভ্যাকসিন নেই। পরে চারজন মিলে ফার্মেসি থেকে ৫৫০ টাকায় ভ্যাকসিন কিনে ভাগ করে দিতে হয়েছে।
আরেক ভুক্তভোগী শাহারিয়ার তুহিন জানান, মাদারীপুর সদর হাসপাতালে কুকুর এবং বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিন পাওয়া যায় না। সেবা নিতে গেলে কর্তব্যরত নার্সরা বলেন- দীর্ঘ ৫ মাস যাবত ভ্যাকসিনের সরবরাহ নেই। আপনারা বাহিরের থেকে কিনে আনুন। এছাড়া সেবা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেন নার্সরা।
হাসপাতালে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমার ভাইকে নিয়ে এসেছিলাম কুকুরে কামড়ের ভ্যাকসিন দিতে। এসে দেখি রোগীদের অনেক ভিড় কিন্তু ভ্যাকসিন নেই। পরে বাহির থেকে কিনে এনে দেওয়া লাগছে।
ফরিদা বেগম নামে এক মা বলেন, আমার ছেলেকে কুকুরে কামড় দিছে। তাই মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসছিলাম। এখন নার্স বলে ভ্যাকসিন নেই। বাহির থেকে কিনে এনে দেওয়ার পর ইনজেকশন দিয়েছে। আবার আসা লাগবে।
হাসপাতালে আসা সাদিয়া আক্তার বলেন, সরকারি হাসপাতালে মানুষ আসে ভালো চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য। কিন্তু যদি এমন ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাহলে আমরা কোথায় যাব। সবার তো আর প্রাইভেট হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার সামর্থ্য নেই যে সেখানে যাবে।
মাদারীপুর জেলা হাসপাতালের তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম জানান, কুকুর ও বিড়ালে কামড়ে আহত অন্তত ৪০ জন আজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে কুকুর ও বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিন নেই। রোগীরা বাহির থেকে কিনে আনলে নার্সরা ইনজেকশন দিয়ে দেন। দীর্ঘদিন যাবত এভাবেই চলছে।
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মুনীর আহমেদ খান জানান, দীর্ঘ ৫-৬ মাস যাবত কুকুর ও বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিনের সাপ্লাই নেই। কয়েকবার ফোন করে জানিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঢাকা থেকে ভ্যাকসিনের সাপ্লাই দিচ্ছে না টিডিসি। আমি আবারও যোগাযোগ করব। দ্রুত এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।
আরএআর