নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলায় মদপানে জয়ন্ত কুমার মন্ডল (২৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর জয়ন্তকে দেখতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন তার স্ত্রী শতাব্দী রাণী।
সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার বাগডোব গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
প্রায় ছয়মাস আগে নাটোরের বড়াইগ্রামের বাগডোব গ্রামের প্রভাত কুমারের ছেলে জয়ন্ত কুমারের সাথে নাটোর শহরতলীর হাজরা নাটোর এলাকার শ্যামল চন্দ্রের মেয়ে শতাব্দী রাণীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর শতাব্দী তার বাবার বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। গত শনিবার বিকেলে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে জয়ন্ত কুমার তার শ্বশুরবাড়িতে যান। পরে শতাব্দীকে নিয়ে পূজার কেনাকাটা করেন। রাতে জয়ন্ত বাড়ির বাইরে কোথাও গিয়ে মদ্যপান করেন। এর কিছুক্ষণ পর অসুস্থ হয়ে জয়ন্ত শ্বশুড়বাড়ি থেকে নিজের গাড়ি নিয়ে বাড়ি চলে যান।
এর পরদিন সকালে জয়ন্ত আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রথমে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর সেখান থেকে জয়ন্তর চাচাতো ভাই মিলন তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেদিন ভোরে জয়ন্ত মারা যান।
সেখানে ময়নাতদন্ত ও সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে সোমবার বিকেলে জয়ন্তের মরদেহ বাড়িতে নেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে জয়ন্তের স্ত্রী শতাব্দী রাণী, তার বাবা শ্যামল চন্দ্র, মা রুপালি রাণীসহ স্বজনরা মরদেহ দেখতে যান। এ সময় তাদের মরদেহ দেখতে না দিয়েই মৃত জয়ন্তর চাচাতো ভাই মিলনসহ বেশ কয়েকজন তাদের ওপর চড়াও হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে উদ্ধার করে।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে শতাব্দী রাণী বলেন, মৃত স্বামীর মুখটা দেখতে না দিয়ে আমাকেসহ সবাইকে মারধর করলো।
জয়ন্তর চাচাতো ভাই মিলন বলেন, শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে মদ খেয়ে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করায় এবং মৃত্যুর পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাসপাতালে না থাকায় এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত ছিল। সন্ধ্যায় মরদেহ দেখতে এলে উত্তেজিত জনতা তাদের মারধর করতে থাকে। আমি মারধরের হাত থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি।
এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দেয়। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে জয়ন্তের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
শাহিনুল আশিক/এনএফ