‘ভারতের পানি আগ্রাসনের কারণে আমরা রংপুর অঞ্চলের মানুষ একবার বন্যার পানিতে ডুবছি, আরেকবার খরায় পুড়ছি। তিস্তাপাড়ের মানুষের জীবন প্রকৃতি আজ ধ্বংসের মুখে। নদীতে পানি প্রবাহ দুর্বল থাকায় বালু পড়ে নদীগর্ভ ভরাট হচ্ছে। প্রতি বছর বর্ষায় নদীভাঙন ও বন্যার কবলে হাজার হাজার একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। নদীপাড়ের মানুষরা ফসল, ঘরবাড়ি হারাচ্ছেন।’
‘ভারতের পানি আগ্রাসনের কারণে আমরা রংপুর অঞ্চলের মানুষ একবার বন্যার পানিতে ডুবছি, আরেকবার খরায় পুড়ছি। তিস্তাপাড়ের মানুষের জীবন প্রকৃতি আজ ধ্বংসের মুখে। নদীতে পানি প্রবাহ দুর্বল থাকায় বালু পড়ে নদীগর্ভ ভরাট হচ্ছে। প্রতি বছর বর্ষায় নদীভাঙন ও বন্যার কবলে হাজার হাজার একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। নদীপাড়ের মানুষরা ফসল, ঘরবাড়ি হারাচ্ছেন।’
রোববার (০৬ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর নগরীর কাচারি বাজার সড়কে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ‘তিস্তা বাঁচাও আন্দোলন’ এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন সমাবেশে কথাগুলো বলছিলেন নদী রক্ষা আন্দোলনের সংগঠকরা। তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪টি নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় এবং বন্যা ও নদীভাঙ্গন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে এ মানববন্ধন সমাবেশ করেন তারা।
তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের সংগঠনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট পলাশ কান্তি নাগের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের সদস্য রেদোয়ান ফেরদৌস, সবুজ রায়, হীরা লাল বর্মন, তিস্তাপাড়ের বাসিন্দা আরমান হোসেন দুলু, তারা মিয়া প্রমুখ। সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন, রংপুর সিটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মানিক।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভারত সরকার একতরফাভাবে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে আন্তর্জাতিক নদী আইন লঙ্ঘন করেছে। শুধু তিস্তার ক্ষেত্রেই নয়, ভারত থেকে আসা ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি প্রবাহ তারা একইভাবে নিয়ন্ত্রণ কিংবা অন্যায়ভাবে প্রত্যাহার করছে।
নেতারা আরও বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে আজ পর্যন্ত সমস্ত শাসকদলগুলো যারা ক্ষমতায় ছিল, কেউ বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থের কথা বিবেচনা করেনি। পানি সম্পদ রক্ষার কথাও চিন্তা করেনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর মতো সাম্রাজ্যবাদী ভারতের শাসকদের সঙ্গে নতজানু ও অন্যায় সমঝোতা করে চলছিল দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে।
তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনকারীরা বলেন, ভারতের পানি আগ্রাসনের কারণে রংপুর অঞ্চলের প্রায় ২ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে। গোটা অঞ্চলের কৃষি-মৎস্য সম্পদ, পরিবেশ-প্রকৃতি বিপর্যস্ত। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভারতের কাছ থেকে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে আন্তরিক হলে রংপুর অঞ্চলের মানুষের কষ্ট লাঘব হবে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টাসহ রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলদের কাছে দ্রুত তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়সহ তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে নেতারা বলেন, প্রতি বছর বন্যায় আমরা রিলিফ চাই না, আমরা তিস্তা চুক্তির বাস্তবায়ন চাই। তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চাই। সেই সঙ্গে তিস্তাসহ অভিন্ন ৫৪ নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় না হওয়া পর্যন্ত রংপুরের সর্বস্তরের মানুষকে ধারাবাহিকভাবে আন্দোলনে শামিল থাকার আহ্বান জানানো হয়।
মানববন্ধন সমাবেশে তিস্তা বাঁচাও আন্দোলনের সংগঠক ও কর্মী ছাড়াও তিস্তাপাড়ের ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় মানুষরা অংশ নেন। কর্মসূচি চলাকালে তারা দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এফআরএস