বাড়ছে তামাক পণ্যের ব্যবহার, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অসংক্রামক রোগও

বাড়ছে তামাক পণ্যের ব্যবহার, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অসংক্রামক রোগও

দেশে তামাক পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অসংক্রামক রোগের হারও ভয়াবহ আকারে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের দাবি, দেশে হৃদরোগ, ক্যান্সার, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ ও ডায়াবেটিস ইত্যাদি অসংক্রামক রোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এর অন্যতম কারণ হলো তামাক পণ্যের ব্যবহার।

দেশে তামাক পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অসংক্রামক রোগের হারও ভয়াবহ আকারে বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের দাবি, দেশে হৃদরোগ, ক্যান্সার, ফুসফুসের দীর্ঘমেয়াদি রোগ ও ডায়াবেটিস ইত্যাদি অসংক্রামক রোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এর অন্যতম কারণ হলো তামাক পণ্যের ব্যবহার।

শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের হলরুমে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে তরুণ চিকিৎসকদের ভূমিকা’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালায় এ কথা বলেন বক্তারা।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভীর সভাপতিত্বে কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের মহাসচিব অধ্যাপক ফজিলা-তুন-নেসা মালিক। তিনি বলেন, দেশে ক্যান্সার, হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের মতো অসংক্রামক রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আমাদের দেশে অল্প বয়সেই হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অন্যতম কারণ তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করা। তাই তরুণ চিকিৎসকদের তামাকের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জনসাধারণকে জানানো দরকার। যাতে তামাকের ব্যবহার প্রতিরোধ করা যায়।  

কর্মশালায় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, ই-সিগারেট নিয়ে বাংলাদেশে তামাক কোম্পানিগুলো ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে আসছে। বিশেষ করে তরুণদের টার্গেট করে সিগারেট ছাড়ার মাধ্যম হিসেবে ই-সিগারেট/ভ্যাপ নিয়ে অনলাইনে নানা ধরনের প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে তারা। একইসঙ্গে সিগারেটের চেয়ে কম ক্ষতিকর তুলে ধরে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে তাদের ব্যবসার স্বার্থে। ই-সিগারেট কোনোভাবেই সিগারেটের চেয়ে কম ক্ষতিকর নয়। তাই বাংলাদেশে ই-সিগারেটের ভয়াবহতা বন্ধে ভ্যাপ, হিটেড টোব্যাকোসহ সব ধরনের ই-সিগারেট এখনই নিষিদ্ধ করা দরকার।

কর্মশালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে সস্তায় সিগারেট পাওয়া যায়। তাই সিগারেটের ব্যবহার কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় হ্রাস করতে এর দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করতে এবং এর ব্যবহার কমাতে কার্যকরী করারোপের বিকল্প নেই।  

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস, বাংলাদেশের অ্যাডভোকেসি ম্যানেজার মো. আতাউর রহমান মাসুদ তরুণদের আসক্ত করতে তামাক কোম্পানিগুলোর প্রচারণা কৌশল সম্পর্কে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাটেল অব মাইন্ডস নামে তরুণ শিক্ষার্থীদের চাকরি দেওয়ার নাম করে সিগারেটের প্রচারণা করে। একইসঙ্গে রেস্তোরাঁগুলোতে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত এলাকা (ডিএসএ) তৈরির করে দেয়; যাতে তরুণরা সহজেই তামাক পণ্যের ওপর আসক্ত হয়ে পড়ে।

দিনব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী তরুণ চিকিৎসকরা চারটি দলে বিভক্ত হয়ে দলগত আলোচনা করে তামাক নিয়ন্ত্রণে চারটি পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করেন। সেগুলো হলো— তামাক পণ্যে কার্যকর করারোপ করা, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা, তামাক কোম্পানির প্রচারণা বন্ধ করা এবং ই-সিগারেট/ভেপিং আইন করে নিষিদ্ধ করা।

এসময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস, বাংলাদেশের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির উপদেষ্টা ও অতিরিক্ত সচিব শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীসহ দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

টিআই/জেডএস

Visit Source Page

Leave a Comment

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *